নুরুল আমিন রনির মাস্তানির পক্ষে প্রভাষ আমিনের নির্লজ্জ ওকালতি

ফ্যাসিবাদ কীভাবে শেকড় গাড়ে দেখুন। এটিএনে কাজ করা প্রভাষ আমিন পেশায় একজন সাংবাদিক। সে চট্টগ্রামের নুরুল আজিম রনির পক্ষে কেঁদে কেটে একাকার। যেই ছেলেটিকে ভিডিও ফুটেজে সবাই চড় মারতে দেখলো, যে অধ্যক্ষ পিটানোর আসামি তাকে এই দলবাজ ফ্যাসিস্ট সাংবাদিক সেটাকেও মহিমান্বিত করার চেষ্টা করলেন। সমাজে সহিংসতাকে আর সন্ত্রাসকে এভাবেই ধীরে ধীরে আদর্শের নামে জায়েজ করে চলেছে এরা।

এই সন্ত্রাসী রনিকে বোকা এংরি ইয়ংম্যানের তকমা লাগিয়ে প্রভাষ সেটাকে জায়েজ করার চেষ্টা করেছে। তাঁর মতে রনি চট্টগ্রামে রনির কারণেই কেউ বাড়তি ফি নিতে পারেনা। রনি সবাইকে চাবকে ঠিক রাখে আহা। এযেন সেই ওয়ারলর্ড যে তাঁর অঞ্চলে তাঁর নিজের আইন চালু রাখে। এমনকি প্রভাষ জামাত শিবির মোকাবেলায় তাঁর অস্ত্র নেয়াকেও কোমলভাবে জায়েজ করার চেষ্টা করেছে। কি ভয়ানক। প্রভাষদের কারণেই ক্রস ফায়ার বৈধতা পায়, গুম বৈধতা পায়।

প্রভাষ রনির পক্ষে সাফাই দিচ্ছে যে সে অধ্যক্ষদের ছাত্রদের থেকে বাড়তি টাকা আদায়ের বিরুদ্ধে লড়ছে আর অধ্যক্ষদেরকে চড় থাপ্পর মারছে। প্রভাষ বলতে চাইছে রনির কোন বৈষয়িক স্বার্থ নাই। সে রবিনহুড। কিন্তু হাসিনার উন্নয়নের সরকারের আমলে অধ্যক্ষরা এত বেপরোয়া কেন? সরকারি আইন ও নির্দেশ ভঙ্গ করে বাড়তি টাকা তুলে নিজের পকেটে ভরছে কেন? কার সাহসে? রাষ্ট্র কেন এখানে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে ফেল করেছে, এটা নিয়ে প্রভাষের কোন বক্তব্য নাই। কিন্তু রবিনহুড রনিকে দিয়ে এই দুর্নীতি বন্ধ করার আকাঙ্খা করছেন! সত্যিই অদ্ভুত মানুষ এই প্রভাষ আমিন!

প্রভাষ লিখেছে, “তবে রনির শত্রুর কোনো অভাব নেই। ঘরে-বাইরে শত্রু। জামাত-শিবির তার জীবনের শত্রু। চট্টগ্রামের মাটি জামাত-শিবিরের ঘাঁটি। সেই ঘাঁটিতে বসেই তাদের সাথে রনির লড়াই হয়। জামাত কন্যা এবং জামাতা যখন মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী আর আওয়ামী লীগের এমপি হন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতার নীতি-নৈতিকতা-আদর্শ যখন আপসের চোরাবালিতে হারিয়ে যায়; তখনও রনিরা জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখেন। আর লড়াই করতে হাতে তুলে নেন অস্ত্র। আবারও ভুল, আইন হাতে তুলে নেয়া।”

এখানে প্রভাষ চেষ্টা করেছেন বলতে, অস্ত্র ছাড়া বলপ্রয়োগের লড়াই জায়েজ। অস্ত্র মানেই আইন। রনির লড়াইটা কী সেটা বলেনা প্রভাষ। অথচ “রনির লড়াই” বলতে একটাই হওয়ার সুযোগ আছে সেটা হল রাজনৈতিক লড়াই এবং তা কোন অস্ত্র বা অস্ত্র ছাড়া কোন ধরণের বলপ্রয়োগ না করে। সোজা ভাষায় বললে, রনি কেবল ভাব বা আইডিয়া ছড়ানো আর জনমত তৈরির লড়াই ছাড়া আর কিছুই তার করার কথা না। জামাত বা অ-আওয়ামি কারও রাজনীতি বন্ধ করার কোন এক্তিয়ারই রনির নাই। আর এইটা করার এক্তিয়ার পুলিশেরও নাই। জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে যেই আইন (প্রভাষের মতে অস্ত্র) রনি তুলে নিয়েছে সেই অস্ত্র বা প্রভাষের মতে আইন পুলিশেরও তুলে নেয়ার এক্তিয়ার নেই।

একটা আধুনিক রাষ্ট্রে কোন ব্যক্তি বা কোন সংগঠন কোন অবস্থাতেই আইনের রাষ্ট্রের প্যারালাল শাসন নিশ্চিত করার কাজ করতে পারেনা; কোন শক্তি প্রয়োগ করতে তো নয়ই। রাষ্ট্র ছাড়া এটা আর কারও কাজ না। বরং তেমন কোন চেষ্টা করাই অপরাধ। শক্তি প্রয়োগের একচেটিয়া কর্তৃত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র চালাচ্ছে প্রভাষের প্রিয় দল। প্রভাষ এটাও জানে এই রাষ্ট্র আর তাঁর প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁর প্রিয় দল ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন সরকারি দলের নানান গণসংগঠনের অনুষ্ঠানে পুলিশ অতিথি হয়ে আসে, আবার বক্তৃতাও করে। তাইও প্রভাষ চান তার প্রিয় দলের ওয়ার লর্ড রবিনহুড টাইপের মাস্তান, তারা তাদের মাফিয়াতন্ত্র দিয়ে একটা প্যারালাল প্রশাসন গড়ে তুলবেন। রনিরা তাদের “জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে লড়াই জারির” নামে এটা করুক প্রভাষের সহানুভুতি তৈরি হচ্ছে এই খায়েস থেকে।

এই গার্বেজ রচনা আবার পরিবর্তন নামের পত্রিকা ছাপেও। এদের না আছে রাষ্ট্র নিয়ে ধারণা, না আছে সাংবাদিকতা নিয়ে ধারণা। প্রভাষের এই লেখা কোন সাংবাদিকের লেখা নয়, রাজনৈতিক কর্মীর লেখা।

আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় না থাকলে তো প্রভাষেরা করে কম্মেও খেতে পারবেনা। কে ওদের মতো দলীয় কর্মিকে পুষবে?

Share

One thought on “নুরুল আমিন রনির মাস্তানির পক্ষে প্রভাষ আমিনের নির্লজ্জ ওকালতি

  1. খুবসুন্দর বিশ্লেষণধর্মী লেখা। প্রভাষের মুখে সঠিক চপেটাঘাত।

Leave a Reply to Sumaiya Islam Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter