অস্ট্রিয়ার সম্রাট দ্বিতীয় জোসেফের সাথে আমি বাংলাদেশের এক ধরণের রাজনৈতিক চিন্তার মিল দেখতে পাই।
দ্বিতীয় জোসেফ ১৭৬৫ থেকে ১৭৯০ পর্যন্ত অষ্ট্রিয়া শাসন করেন।
তিনি তার শাসনকালে যেসমস্ত সংস্কার করেছিলেন, তার জন্য তার নাম আজো সসন্মানে উচ্চারিত হবার কথা ছিল।
তিনিই প্রথম সমস্ত অস্ট্রীয় ভুখণ্ডকে একত্র করে একক রাষ্ট্র করেন, রাষ্ট্রীয় ঐক্যের জন্য জার্মানকে রাষ্ট্রভাষা করেন, সবার জন্য সমান আইন ও বিচার প্রবর্তন করেন, সামন্ত সমাজকে ভেঙে দিয়ে গণতান্ত্রিক সাম্য প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই প্রথম মৃত্যুদণ্ড প্রথা বিলোপ করেন, কয়েদীদের উপরে নির্যাতন প্রথা বাতিল করেন। ভুমিদাসদের বেগার শ্রম দেয়ার প্রথা ছিল, সেটা বাতিল করেন।
এটুকু করেই থেমে যাওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু অনেকেই জানেনা কোথায় থামতে হয়।
তিনি এরপরে পোপের ডিক্রি প্রচারে বাধা দিতে শুরু করেন। অস্ট্রিয়াতে ছয়শো ধর্মীয় মঠ উচ্ছেদ করেন, মঠের সম্পদ কেড়ে নেন। চার্চ আর মঠগুলোর কাজকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেন। ধর্মীয় শোভাযাত্রা, তীর্থযাত্রায় বাধা দিতে থাকেন।
ততোদিনে ইউরোপে মার্টিন লুথারের ধর্ম সংস্কার আন্দোলন এমনকি কাউন্টার রিফর্মেশন হয়ে গেছে। তারপরেও জোসেফের ধর্মের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত জেহাদ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। জনগণ এমনকি অস্ট্রীয় বিদ্যৎসমাজ তার বিপক্ষে চলে যায়।
জোসেফ মৃত্যুশয্যায় উপলব্ধি করেন তার ধর্ম সংস্কার ব্যর্থ হয়েছে। তিনি মৃত্যুশয্যায় আদেশ দেন তার সকল ধর্ম সংস্কার বাতিল করার। শুধু তাই নয় তার সমাধিতে কী উৎকীর্ণ করা হবে সেই আদেশও জারি করেন।
“Here lies the man who never succeeded in any thing that he attempted.”
“এখানে এমন একজন ব্যক্তি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন যিনি জীবনের কোন কাজেই কৃতকার্য হননি।”
যারা খেয়ে না খেয়ে বাংলাদেশে ধর্ম উৎখাতের মিশনে আছেন, তাদের জন্য দ্বিতীয় জোসেফের জীবনের গল্প শিক্ষণীয় হতে পারে।
2 thoughts on “অস্ট্রিয়ার সম্রাট দ্বিতীয় জোসেফ এবং বাংলাদেশে ধর্ম উৎখাতের মিশন।”
বাংলাদেশের কু-মনা/বুদ্ধিজীবীরা একটা কথাই জানে , সেটা হল তাদের কথার পর ফুলস্টপ,
কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই এর পর ফুলস্টপ ।
স্যার খুব ভাল লেখা হয়েছে। নতুন কিছু জানলাম।