হিন্দু বিদ্বেষ তৈরি করে নয়নের পথ !

নয়ন চ্যাটার্জির গুণমুগ্ধ কয়েকজন আমার গতকালের লেখায় কিছু প্রশ্ন তুলেছেন। আমি প্রশ্ন তোলাকে উৎসাহিত করি। আলোচনা অনেক সমস্যার সমাধান করে দেয়। এইটা ইন্টারেস্টিং যে আমার বিরুদ্ধে নয়ন চ্যাটার্জি, জাগো হিন্দু পেইজের বিজেপিপন্থী উগ্র হিন্দুরা, আর আসাইলামবাদী নাস্তিকেরা সমানভাবে তৎপর। প্রথমেই ভেবে দেখুন তাদের কোথায় কমন ইন্টারেস্ট?

সবচেয়ে কমন যেই প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে সেটা হচ্ছে, “নয়ন চ্যাটার্জি তো ভুল কিছু লেখে না ভুল লিখলে আপনি সমালোচনা করুন।”

“ভুল” কথাটা দুই ভাবে মানুষ ব্যবহার করে – এক কারও দেয়া তথ্য ভুল থাকা অর্থে। আর আরেক “ভুল” হল পাঠককে ভুল পথে নিয়ে যাবার ভুল। নয়ন চ্যাটার্জি করে দ্বিতীয়টা। তাই তার পথের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান।

রাজনীতি একটা জনগোষ্ঠীকে কোন না কোন লক্ষ্যে নিয়ে যায়। নয়ন চ্যাটার্জির লক্ষ্য কী? লক্ষ্য একটাই, আর সেটা হিন্দু বিদ্বেষ তৈরি করা। আমি নিশ্চিত না সে কার পক্ষ হয়ে এই হিন্দু বিদ্বেষ তৈরি করছে। বর্তমান সরকারের ভারত তোষণ এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রাখবে এই মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে এর বিরুদ্ধে একটা হিন্দু বিদ্বেষ তৈরি করাটাই নয়নের পথ। আমি শক্ত ভাবেই মনে করি সরকারের ভারত তোষণের আচরণ ও নীতির বিরোধীতা করা দরকার কিন্তু তা কখনোই হিন্দু বিদ্বেষ করে নয়। এটা আমরা করতে পারি না। সেটা করতে হবে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংগ্রাম করে।

এই হিন্দু বিদ্বেষ দিয়ে বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলমান সম্প্রদায়কে কোন লক্ষ্যে ধাবিত করতে চায় নয়ন চ্যাটার্জি? ভেবে দেখুন। আরো ভেবে দেখুন আপনার সেই লক্ষ্য অর্জন বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় সম্ভব কিনা? সারা বিশ্বে মুসলমান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যেই তীব্র বিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, সারা খ্রিস্টান দুনিয়া তার সাথে হিন্দুত্তবাদী ভারত ও জায়নবাদী ইসরায়েল যেই ইসলামফোবিয়া তৈরি করেছে সেটায় নয়ন ঘী ঢালছে কিনা? নয়ন চ্যাটার্জী ইসলামের সকল শত্রুকে এমন কিছু বলার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে কিনা যে “দেখ মুসলমানেরা অন্য সম্প্রদায়কে সহ্যই করতে পারেনা। ভিন্ন ধর্মের মানুষের সাথে এরা থাকতেই পারেনা।“ নয়ন চ্যাটার্জির হঠকারিতা আপনাকে এমন বিপদে ফেলুক এটা আপনি চান কিনা ঠিক করুন।

আমাদের কাজ বাংলাদেশে একটা ইনক্লুসিভ পলিটিক্যাল কমিউনিটি গড়ে তোলা। আবার একটা পলিটিক্যাল কমিউনিটি গড়ার মানে এইটা একটা রাজনৈতিক লড়াই আর সেই লড়াইটা লড়তে হবে বৃহত্তর কমিুনিটির সাথে মিশে, সাথে নিয়ে তার একটা অংশ হিসাবে। এটা হিন্দুর বিরুদ্ধে উস্কানি তৈরি করার কাজ না। এই কাজটা আবার এক শ্রেণীর হিন্দুরা করতে চায়না তারা লড়াইটা করতে চায় নয়নের মত একইভাবে মুসলমানদের বিরুদ্ধেই; ঠিক একই ভাবে এভাবে নয়ন চ্যাটার্জিরা আসলে লড়াইটা করতে চায় হিন্দুদের বিরুদ্ধেই।

ভবিষ্যতের রাষ্ট্র কেমন হবে? সেটা বরং নয়ন চ্যাটার্জিরা বলুক। সেটা স্পষ্ট করতে গেলেই বুঝতে পারবেন সবাইকে নিয়ে চলার কোন তরিকা তাদের নাই। নয়নের কাজ উস্কানি তৈরি করা; দাঙ্গা তৈরি করা, পলিটিক্যাল সলিউশন নয়।

তবে আপনি কার সাথে থাকবেন সেটা আপনাকে ঠিক করতে হবে। নয়নের সাথে থাকলে সে আপনার হাতে তরোয়াল ধয়ায়ে দিয়ে হিন্দু কোতলের কাজে পাঠাবে। আর আমাদের সাথে থাকলে সকল ধর্মের বর্নের জাতির সহাবস্থানে একটা অগ্রসর রিপাবলিক তৈরির কাজে সামিল থাকবেন। আপনি এখন কার সাথে থাকবেন সেই সিদ্ধান্ত আপনি নিজেই নিন।

লেখাটির ফেইসবুক ভার্সন পড়তে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter