স্টেইট ভার্সেস বাটুল সারোয়ার এবং একজন থাবা বাবার মৃত্যু।

বাংলাদেশের স্যেকুলার শিবির মূলতঃ সরকারের চাহিদা মেটাতে মাহমুদুর রহমানের একটা প্রোফাইল তৈরি করছে। মাহমুদুর রহমানকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানানোর স্বার্থে তারা সম্ভবতঃ ইচ্ছা করেই সেটা করে।

সেই প্রোফাইলটা কী? যেটা তাদের নির্মান?

সেটা হচ্ছে, কতিপয় ব্লগারের ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ রচনা আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশের মাধ্যমে ব্লগার হত‍্যার পটভূমি তৈরির জন্য এবং শাহবাগকে নাস্তিক আস্তিক বিতর্কে বিভাজিত করার জন্য মাহমুদুর রহমানকে সর্বোতভাবে দায়ী করা হয়।

ধর্ম বিদ্বেষি ব্লগ নিয়ে প্রথম আলাপ শুরু একটা হাইকোর্টে রিটের মাধ্যমে। রিটটা হয় ২৬ শে জানুয়ারী ২০১২ সালে। শাহবাগ শুরু হওয়ার এক বছর আগে। মামলাটি স্টেইট ভার্সেস বাটুল সারোয়ার নামে পরিচিত।

বাটুল সারোয়ার ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের একজন অধ্যাপিকা। বাটুল সারোয়ার কিছু ব্লগের এড্রেস আর ফেবু প্রোফাইলের এড্রেস উল্লেখ করে তার রিটে বলেন, যে এই জায়গাগুলো থেকে ধর্ম অবমাননা করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির চেস্টা করা হচ্ছে।

আদালত এই রিটের বিষয়বস্তু আমলে নিয়ে স্বরাস্ট্র মন্ত্রনালয়কে দায়িত্ব দেয় এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘ইসলামিক স্কলার’দেরকে আমন্ত্রণ জানায় ধর্ম অবমাননার তথ্য প্রমাণ নিয়ে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করার জন্য। কয়েক দফা বৈঠকের পরে সুনির্দিষ্ট তালিকা যাচাই-বাছাই করে আপত্তিকর ব্লগ ও ফেইসবুক পেইজ বন্ধ করার জন্য সরকার থেকে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেয়ার পর বিটিআরসি সেগুলো বন্ধ করে দেয়।

৮৪ টি ব্লগারের প্রোফাইল, ফেবু পেইজ ও ওয়েবসাইটকে চিহ্নিত করা হয়। তাদের নামধাম ছবি ঠিকানা স্বরাস্ট্র মন্রনালয় সংগ্রহ করে। ২০১২ সালের ২১ মার্চ তাদের ইসলামবিদ্বেষী কার্যকলাপ বন্ধের জন্য হাইকোর্ট রুল জারি করে।

আপনাদের অনেকের মনে থাকতে পারে “ধর্মকারি” নামে একটা নাস্তিকদের মধ্যে জনপ্রিয় সাইট এই সময়েই বন্ধ হয়। এই যাচাই বাছাইয়ের সময়ে যেই সমস্ত সাইট এবং ফেবু প্রোফাইলের নাম ধর্ম অবমাননাকারী হিসেবে তালিকা ভুক্ত হয় তাদের কয়কজন পরবর্তিতে চাপাতি আক্রমনের শিকার হয়ে দুঃখজনকভাবে মৃত্যুবরণ করে।

এর কিছুদিন পরে আওয়ামী ওলামা লীগ সরকারের কাছে নাস্তিকদের একটা তালিকা দেয়। এই তালিকার অনেকেই পরে আক্রান্ত ও নিহত হয়।

মাহমুদুর রহমান সম্পাদিত আমার দেশ পত্রিকা থাবা বাবার ব্লগ প্রকাশের আগেই এসব ঘটনা ঘটেছে। আর থাবা বাবার ব্লগ আমার দেশ পত্রিকা প্রথমেই ছাপে নাই। আগে ছেপেছে ইনকিলাব আর সরকারের মন্ত্রীর পত্রিকা ইত্তেফাক। আমার দেশ ছেপেছে পরে। আর এটা ছাপা হয়েছে থাবা বাবার মৃত্যুর পরে আগে নয়।

তাহলে মাহমুদুর রহমানের বিষয়ে আলাপের আগে তো বাটুল সারোয়ারের রিট, তার রায়, আদালতের নির্দেশনা ও সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে আগে আলাপ করতে হয়। এই কাজটা তো করেছে এই সরকারের আমলের আদালত আর প্রশাসন।

ব্লগার হত্যার পটভুমি তৈরির জন্য মাহমুদুর রহমানকে বলির পাঠা বানিয়ে স্যেকুলারেরা ক্রুশে বিদ্ধ করেছে যিশুর মতো। তিনি যেন তাদের সকল আদিপাপকে ধারণ করে ক্রুশে ঝুলে থাকেন। আর নিস্পাপ স্যেকুলারেরা তাদের পাপ থেকে মুক্তি পেয়ে পুনরুত্থিত হয়।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter