“মুক্তিযোদ্ধা কোটা” বলে কিছু নাই। যা আছে সেটা “মুক্তিযোদ্ধা পোষ্য কোটা” বা মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও নাতিপুতিদের কোটা। মুক্তিযোদ্ধা আর মুক্তিযোদ্ধার পোষ্য এক জিনিস নয়। মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব আর আত্মত্যাগের উত্তরাধিকার সমস্ত দেশবাসী। কারণ মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটা জনযুদ্ধ। জনযুদ্ধের অবদানের গৌরব রক্তে প্রবাহিত হয় না।
একাত্তরে আমাদের শক্তির উৎসই ছিল মুক্তিযোদ্ধা আর জনতার নির্লোভ ঐক্য। মুক্তিযোদ্ধারা পোষ্য কোটার জন্য যুদ্ধে যায়নি। তারা এমন একটি স্বপ্নের দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিল, যেই দেশে সাম্য থাকবে ইনসাফ থাকবে। এটা স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত হয়েছিল।
মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও পোষ্য কোটা কি মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মান দেয়ার জন্য করা হয়েছে। মোটেই না। এইটা ভুয়া কথা। মুক্তিযুদ্ধের ময়দানে জনতার যে নির্লোভ ঐক্য তৈরি হয়েছিল সেটাকে বিভক্ত করার হীন ইচ্ছা থেকে কথা হয়েছে। জনতা বিভক্ত হয়ে গেছে মুক্তিযোদ্ধা আর অমুক্তিযোদ্ধায়। মুক্তিযোদ্ধা পোষ্যদের জন্য এক আইন আর অন্যদের জন্য আরেক আইন। এমনকি আপনি বীরাঙ্গনার সন্তান হলেও আপনার বেইল নাই, আপনি শহীদ পরিবারের সন্তান হলেও আপনার বেইল নাই।
আমি যদি তর্কের খাতিরে মুক্তিযোদ্ধা পোষ্য কোটা মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মান দেয়ার জন্য আপনাদের এই যুক্তি মেনেও নিই তাহলে বীরাঙ্গনা আর শহীদ পরিবার কী দোষ করলো। তাদের অবদান ফেলনা?
এই প্রশ্নের কোন জবাব আপনি পাবেন না।