মান্ধাত্মা আমলের অরগানোগ্রাম দিয়ে আধুনিক সময়ের হাসপাতাল চলতে পারে না

এই মান্ধাত্মা আমলের অরগানোগ্রাম দিয়ে আধুনিক সময়ের হাসপাতাল চালানো যায়না।

এটা অবাক করার মতো বিষয় যত বড় সরকারী হাসপাতালই হোক না কেন কোন হাসপাতালে লণ্ড্রী বিভাগ নাই। হাসপাতালের লিনেন মানে অপারেশন থিয়েটারের ড্রেস, বিছানার চাদর, রোগীর পোশাক, জানালার পর্দা, বালিশের কভার এসব ধোয়া হয় বাইরে ধোপার কাছে থেকে।

একদিন এক বিখ্যাত সরকারী হাসপাতালের পরিচালকের রুমে এলেন একজন সার্জন, অপারেশন থিয়েটারের ড্রেস পড়ে ওয়াশ নিয়ে। ওয়াশ নেয়ার পরে হাত দুটো সামনে নিয়ে হাটতে হয়। তিনি গোটা হাসপাতাল এভাবেই হেটে এসে পরিচালকের রুমে ঢুকলেন। সবাই অবাক। সার্জনের মুখ রক্তবর্ণ। তিনি চিৎকার করে বললেন, দেখেন স্যার। এই বলে, উনি ঘুরে দাঁড়ালেন। সবাই দেখলো তার অপারেশন থিয়েটারের পোশাকের পিছনে পাখির গু দিয়ে ভর্তি। পরিচালক রসিকতা করে বললেন, এইটা স্টেরাইল গু, অসুবিধা নাই।

হাসপাতালটিকে ঠিকাদারের মাধ্যমে লিনেন ধুতে দিতে হয় বাইরে। সকল হাসপাতালেরই একই দশা। ঠিকাদারেরা এটা ধুতে দেয় দরিদ্র ধোপাদের কাছে, তাঁরা খালে বিলে ধুয়ে খোলা আকাশের নিচে শুকাতে দেয়। পাখি তো ওই কাপড়ে হাগবেই।

কোন সরকারী হাসপাতালে সিকিউরিটি বলে কোন ডিপার্টমেন্ট নাই। এতো মানুষ আসছে যাচ্ছে, এতো সম্পদ থাকে সেই হাসপাতালগুলোতে, এতো মারপিট হয়, ভাংচুর হয়; এমন কোন সরকারী হাসপাতাল আছে কিনা জানা নেই যেখানে ভাংচুর হয়নি। তাও সেখানে সিকিউরিটি বলে কোন ডিপার্টমেন্ট নেই।

কোন সরকারী হাসপাতালে কি পারচেজ ডিপার্টমেন্ট আছে?

বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের পদ আছে?

এপিডেমিওলজিস্ট আছে?

এস্টেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট আছে?

হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্ট আছে?

রিসার্চ এণ্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট আছে?

পেশেন্ট এডভাইস ডিপার্টমেন্ট বা কাস্টোমার কেয়ার ডিপার্টমেন্ট আছে?

এমনকি একজন গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট আছে?

অথচ হাসপাতালে মালীর পদ আছে, আছে মশালচির পদ। মশালচি মানে জানেন? বৃটিশ আমলে এই পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল যখন বৈদ্যুতিক বাতি আসেনি, এই মশালচি, মশাল বহন করতো। এই পদ এখনো আছে।

আর কি কিছু বলবার দরকার আছে যে বাংলাদেশের হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় আমুল সংস্কার না করলে আমাদের এই হাসপাতাল দিয়ে আমাদের রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিয়ে যে আকাংখ্যা তা পূরণ হবেনা।

লেখাটির ফেইসবুক ভার্সন পড়তে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter