আমরা বুঝতেই পারি ভারতের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু তারা, তাঁদের বয়ানে সেইসব আলাপ কীভাবে করেছিল তার কিছু হদিশ নেয়া যাক।
প্রজা সোস্যালিস্ট পার্টির সমর গুহ বলেছিলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আমাদের বাঙলা ভাগের বেদনা উপশমের একটা সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
সূত্রঃ The Hindu, 28 March 1971, p.9
কিন্তু পুর্ববঙ্গের মুসলমানেরা তো বাঙলা ভাগ চায়নি। বাঙলা ভাগ তো চেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু নেতারা। তাঁদের গোয়ার্তুমিতেই বাঙলা ভাগ হয়েছিল। তাহলে বাঙলা ভাগ সমর গুহদের জন্য বেদনার বিষয় কেন হবে? সেটার কারণ হচ্ছে বাঙলা ভাগ হয়ে পাকিস্তান সৃষ্টির সাথে সাথেই পুর্ববঙ্গের জমিদারিও তাঁদের হাতছাড়া হয়ে যায়। জমিদারি লুন্ঠনের টাকা পশ্চিমবঙ্গে আসা বন্ধ হয়ে যায় এরসাথে শুরু হয় পুর্ববঙ্গ থেকে যাওয়া উদ্বাস্তুদের স্রোত। কোলকাতার সমৃদ্ধিতে ভাটা পড়ে। এটাই তাঁদের কাছে বাঙলা ভাগের বেদনা। যেই ভুল তারা করে ফেলেছিল সেটা শোধারাবার সুযোগ এসেছে বলে তারা মনে করেছিল। এবার আসুন তারা আর কী কী ভেবেছিল, এই বিকল্পপথে জমিদারি ফিরে পাওয়ার তরিকা হিসেবে?
মুক্তিযুদ্ধ যখন চলছে তখন তাঁদের ইন্ডিয়ান জার্নালে কী লেখা হচ্ছে দেখুন।
“স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরি হলে বাংলাদেশ ও ভারতের পারস্পরিক উপকারী বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক সৃষ্টি হবে। ভৌগলিকভাবেই উপমহাদেশে যে পরিবহণ ও বাণিজ্য লেনদেনের যোগাযোগব্যবস্থা ছিল তার পুনঃস্থাপন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলে উৎপাদন খরচ কমাবে। এই একীভূত বিশাল বাজার বিপুল বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করবে। মৃতপ্রায় পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতি পুনর্জীবিত হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে তার রাজনীতিও পরিবর্তিত হবে।“
সূত্রঃ Ashok Sanjay Guha, “Bangla Desh and Indian Self – Interest ” Economic and Political Weekly (Bombay) , vol. vi , 15 May 1971, p . 9&3।
এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যেতে পারে, পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক দুর্গতির সাথে সাথেই সেখানে বাম ও চরমপন্থার উত্থান ঘটছিল। রাজনীতির পরিবর্তন বলতে, অশোক সঞ্জয় গুহ তারই ইঙ্গিত দিচ্ছেন। আর বৃটিশ আমলের যোগাযোগ ব্যবস্থার পুনস্থাপন বলতে যা বুঝাতে চাইছিলেন, তা হচ্ছে আজকের কানেক্টিভিটির নামে ট্রানজিট আর ট্র্যানশিপমেন্ট।
১৯৭১ সালের জুলাই মাসেই তারা লিখছেন,”একটি বন্ধুসুলভ বাংলাদেশ ভারতীয় পণ্যের একটি অবাধ বাজার উন্মুক্ত করে দেবে। পশ্চিমবঙ্গের জন্য তা একটি পরিপুরক অর্থনীতি হয়ে দাঁড়াবে। ধুঁকতে থাকা পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতির জন্য তা যথেষ্ট উৎসাহ সঞ্চার করবে।”
সূত্রঃ J. Bhattacharjee, “Case for Indian Military Intervention ” Economic and Political Weekly, vol. vi, no. 27, 3 J u l y 1971, p. 1323
মুক্তিযুদ্ধের পরপরই দ্য হিন্দুতে একটা নিবন্ধ ছাপা হয়, সেখানে লেখা হয়।
“(বাংলাদেশের জন্মের ফলে) ভারতের কৌশলগত প্রকল্প ত্রিপুরায় তেলের অনুসন্ধানের কাজটি সম্পন্ন হবে। অপরিশোধিত তেল পাইপলাইনের মধ্যে দিয়ে আসাম হয়ে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে যাওয়ার চাইতে এটা বাংলাদেশের বন্দর চট্টগ্রামে নিয়ে এসে সেখান থেকে জাহাজে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে এলে পরিবহন খরচ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কম হবে।“
সূত্রঃ The Hindu , 11 January 1972, p. 8
এমনকি তারা এটাও ঠিক করে রেখেছিল যে,
“বাংলাদেশের মুদ্রামান বেশ কিছু সময় ধরে ভারতের সমান করে রাখতে হবে কারণ ভারতই হবে বাংলাদেশের প্রধাণ ও প্রভাবশালী বানিজ্য সহযোগী। এছাড়াও বাংলাদেশ তো ম্যানুফ্যাকচার্ড পণ্য বেশীরভাগ ভারত থেকেই পাবে।“
সূত্রঃ Boudhayan Chattopadhyay,”Impact of Bangladesh: Economic Dimensions”, Seminar # 150, February 1972, pp. 2 2-28
ভারতীয় পুজি এবং বানিজ্যিক স্বার্থ বাংলাদেশের সহজাত স্বার্থের সাথে একাকার। এর কারণ এই নয়যে বাংলাদেশে শ্রম সস্তা বরং যৌথ বিনিয়োগ বাংলাদেশ আর পুর্ব ভারতের অর্থনীতির প্রকৃত একীকরণ ঘটাবে, যেই এলাকা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে একই অর্থনীতির অধীন ছিল।
সূত্রঃ Rajan, ” Bangladesh and After” Pacific Affairs » vol. 45, no. 2, (Summer 1972), p. 201
ভারত নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সাহায্য করেছিল তার নিজস্ব লাভ ক্ষতির হিসাব করেই। তার হিসাব নিকাশে লাভের পাল্লা ভারী ছিল বলেই তারা আমাদের সাহায্য করেছিল। এই সাহায্য নিছক কোন সদিচ্ছাজাত ছিলনা, যা ভারতের তরফে বলার চেষ্টা করা হয়।
যে সমস্ত ভারতীয় ডকুমেন্ট উপস্থাপন করা হয়েছে সেখানে স্পস্তভাবেই দেখা যাচ্ছে ভারত তার নিছক বানিজ্যিক স্বার্থ ও কৌশলগত ইন্টারেস্টের কথা চিন্তা করেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহায্য করেছিল। এই হিসাবে ক্ষতির পাল্লা বেশী হলে ভারত কোন অবস্থাতেই সাহায্যে এগিয়ে আসতো না।
8 thoughts on “ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কী খায়েশ নিয়ে সাহায্য করেছিলো?”
Excellent
পাকিস্তান ভাগের পরিকল্পনা ৭১ এ করেনি ভারত৷ নেহরু সেটা ৪৭ এ নিশ্চিত করে গেছেন৷ তিনি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সাথে বলেছিলেন, “পশ্চিম পাকিস্তান টিকলেও টিকতে পারে কিন্ত পূর্ব পাকিস্তান টেকার কোন সম্ভাবনা নেই৷”
এই কথা গুলো আমরা আজীবন বলে আসছি বাট কথিত চেতনার লেবাস ধারিরা এই চরম সত্যটা হজম করতে ব্যার্থ হচ্ছে । প্রকৃতার্থে ভারত আমাদের বন্ধু নয় বরঞ্চ চরম দুশমন
নানীর মুখে শুনেছিলাম, স্বাধীনতার পর ভারতীয় বাহিনী উত্তরাঞ্চল থেকে বিভিন্ন মানুষের মালামাল লুট করেছিল এতপরিমাণে যে ওসব বহনের জন্য শতশত গরু মহিষের গাড়িও জোড়পূর্বক নিয়ে গিয়েছল। মাইলের পর মাইল এসব গাড়ি হাকিয়ে ভারতীয়রা তাদের দেশে নিয়ে গেছে।
I got some authentic information.
Thanks
I think ..sorry confirmed now you are full idot ….or better word hypocrite ….baler Pakistan to aei apnader kat molla ra e koreche ….kno vule gelen “The Great Calcutta Killings “….jinnah stated that “larke lenge”….after severel round table conference ..subject Pakistan was a dead lock …the knot was opened by Calcutta riot where forces are deployed by sohora bordi followed by noya khali riot..which open the proposal of Pakistan…where those references…what the fucking referrence you put on..dont manipulate people….you Bangla people are fully hypocrite
হাকিস্তানিরা তেল ছাড়া গোয়া মারতো, হেইডাই বুঝি আরামের ছিলো !
Root based writings.