হান্টিংটন তাঁর “ক্ল্যাশ অব সিভিলাইজেশনে” মুসলিম সম্প্রদায়ের একটা সমস্যা চিহ্নিত করেছিলেন আর সেটা হচ্ছে; কোন বৈশ্বিক একক রাজনৈতিক কেন্দ্র না থাকা। তিনি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন সেই বৈশ্বিক কেন্দ্র হওয়ার জন্য তুরস্ক চেষ্টা চালাবে।
তুরস্ক মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতা হওয়ার চেষ্টা চালালে কার লাভ সেটা বুঝতে হলে তুরস্কের আজকের “তুরস্ক” হয়ে ওঠার ইতিহাসটা দেখা দরকার। ইউরোপকে ক্রুসেডে যেতে হয় মধ্যপ্রাচ্যতে। ক্রুসেডে শুধু তারা মধ্যযুগেই যায়নি; তারা আজকেও যাচ্ছে। আর খ্রিষ্টান দুনিয়ার এই ক্রুসেডে যাওয়ার রাস্তা ছিল তুরস্ক। তাই পশ্চিম বা খ্রিষ্টান দুনিয়া ক্রুসেড চালানোর জন্য এমন একটা বাফার অঞ্চল চেয়েছিল যেই অঞ্চল হবে আত্মপরিচয়ে মুসলিম কিন্তু পশ্চিমের মুল্যবোধে পুষ্ট। যেমন অ্যামেরিকার ভিয়েতনাম যুদ্ধ চালানোর জন্য প্রয়োজন হয়েছিল থাইল্যান্ডের, আফগান যুদ্ধের জন্য পাকিস্তানের। ঠিক তেমন পশ্চিমের সাম্ভব্য ক্রুসেডের জন্য সেই ষ্টেট হচ্ছে আজকের আধুনিক তুরস্ক। এই তুরস্কের স্যেকুলারিজম, কামাল আতাতুর্কের বিপ্লব সবকিছুই সেই বাফার ষ্টেট তৈরির প্রকল্প। যেই বাফার ষ্টেট আত্মপরিচয়ে যুক্ত থাকবে মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে কিন্তু পলিটিক্যালি যুক্ত থাকবে পশ্চিমের সাথে। এই তুরস্ক সেই কারণেই পশ্চিমা যুদ্ধ জোট ন্যাটোর সদস্য।
এই তুরস্ক যদি পৃথিবীর মুসলমান সম্প্রদায়ের নেতা হয়ে উঠতে পারে তাহলে আখেরে কার লাভ? তুরস্কের যে কোন পদক্ষেপ পর্যালোচনা করতে হলে তুরস্কের এই “হয়ে ওঠার” ইতিহাস আর তার ভবিষ্যতের স্বপ্নটাকে খেয়াল রাখা জরুরী।
লেখাটির ফেইসবুক ভার্সন পড়তে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন