ঢাকা অ্যাটাক সিনেমা, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির পার্থক্য যেখানে বিশাল।

ঢাকা অ্যাটাক দেখেছিলাম গতকাল বন্ধুদের সাথে। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে গিয়েছিলাম, হতাশ হয়ে ফিরে এসেছি। মাহিয়া মাহি তো একটা গাধা টাইপের অভিনেত্রী, অভিনয়ের “অ” জানেনা। সিনেমার পর্দায় সে আসলেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায় ঢঙ দেখে। আরো অনেকগুলো অভিনেতা নিয়েছে যেগুলো হাত পাই নাড়াতে পারেনা, কথা বলা তো দূর কি বাত। আমাদের মাঝে মাঝে যেসব পুলিশি গল্প শুনতে হয় এই সিনেমাটা তার চিত্ররূপ। দুর্বল, মেধাহীন সিনেমাটোগ্রাফি।

তবে স্বীকার করি, এই সিনেমায় দুইটা ওয়ার্ল্ড ক্লাস জিনিস আছে, একটা টিকাটুলির মোড় শিরোনামে গান। দুর্দান্ত কোরিওগ্রাফি, আমি কনফার্ম ইন্ডিয়া থেকে করে আনছে। আর আরেফিন শুভ বান্দরবনে এক ভিলেনকে দৌড়ে ধরতে গিয়ে পায়ে একটা পারফেক্ট লো কিক মেরে ভিলেনকে ধরাশায়ী করা। এই দুইটা ছাড়া আর এই সিনেমায় আর যা আছে তা হচ্ছে, নতুন ভিলেন জিসান, ভিতরে মাল আছে এইটার। কাজে লাগাইলে মাত করে দেবে।

সিনেমাটিক অসঙ্গতি দেখেন কী কী?

১/ ভিলেন জিসানের চোখ কটা, তার ছোটবেলার চোখ কালো।
২/ সোয়াট টিমের পিক অপারেশনের সময়ে কমান্ডারের মোবাইলে ক্ষণে ক্ষণে বৌ ফোন দেয়। সাসপেক্ট তো মোবাইলের রিং টোনেই পালাইবে।
৩/ মালোয়েশিয়ার পার্টটা অনাবশ্যক। এটা কেন আনা হইছে সিনেমায় সেটা বুঝা দুষ্কর। সিনেমায় মালোয়েশিয়ার পার্টের কোন কন্ট্রিবিউশন নাই।
৪/ মালোয়েশিয়ার ইংরেজি সংলাপ ভুল এবং দুর্বল। এটা অন্যকে দিয়ে ডাব করানো উচিৎ ছিল। ইংরেজী সাব টাইটেলেও ম্যালা ভুল। অভিনেতারা ভালো ইংরেজি বলতে পারেনা।
৫/ কম্পিউটার গ্রাফিক্সের কাজ অখাদ্য।
৬/ চট্টগ্রামের মেজবানে কেউ মদ খায়না, নর্তকিও নাচেনা। মেজবান একটি উন্নত সংস্কৃতির অভিজাত সামাজিক অনুষ্ঠান। পরিচালক মেজবান কী জিনিস জানেনা।
৭/ মেকআপ খুব দুর্বল। পাড়ার নাটকেও এর চাইতে ভালো মেকআপ হয়।
৮/ আরেফিন শুভরে মার্শাল আর্টের ব্ল্যাক বেল্টে প্র্যাকটিস করেত দেখা যায় প্রথমে। ব্ল্যাক বেল্ট বাধা ভুল নটে, আর ব্ল্যাক বেল্টে ড্যানের চিহ্ন নাই।
৯/ কেমিক্যাল এনালাইসিস করার সময় মরিচবাতির মতো লাল নীল আলো জ্বলে না কোন মেশিনে। এইসব মেশিন বানায়ে দেখানো হাস্যকর।
১০/ সারি দিয়ে সরল রেখায় লাইন ধরে সোয়াটের টিম অভিযানে যায় নাকি? কোন স্ট্রাইকিং টিম এক লাইন ধরে মুভ করে নাকি?
১১/ আরেফিন শুভ দুইটা পিস্তল রাখা যায় এমন শোল্ডার হোলস্টার পরে। এটা কোন দেশের পুলিশ ইউজ করে কি? এইটা তো গুন্ডা আর মাফিয়ারা করে দেখি সিনেমায়। এইটা তো আমাদের পুলিশ তো ইউজ করেইনা। তার উপরে আবার একটা হোলস্টার ফাকা থাকে। তো সিঙ্গেল পিস্তলের শোল্ডার হোলস্টারের ইউজ করলে সমস্যা কী ছিল? ডাবল ইউজ করলে দুইটা পিস্তল দিলে সমস্যা কী ছিল?

আর মনে নাই, এইসব মনে রাখাও বিরক্তিকর কাজ। সিনেমাটা দেখে টাকা আর সময় নষ্ট। ধুর।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter