মৌলবাদী কে? মৌলবাদের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক থাকা কি আবশ্যিক? আমাদের দেশের এক ধরণের মানুষের ধারণা মৌলবাদ শুধু ধর্মের বিষয়। পৃথিবীতে যে কোন আদর্শকে ঘিরে মৌলবাদ- সহিংসতা জন্ম নিতে পারে। শুধু নিতে পারে বললে ভুল হবে নিয়েছেও। মৌলবাদ ও সহিংসতার উত্থানের উৎস হিসেবে এমনকি বৌদ্ধ ধর্মও মুক্ত নয়, সমাজতন্ত্রও মুক্ত নয়। যখন কেউ বলে “সমাজতন্ত্র অভ্রান্ত”, এটাই হয়ে ওঠে মৌলবাদ। আর যখন বলা হয়, “সমাজতন্ত্রই ইতিহাসের নিয়তি” তখন এটা হয়ে ওঠে নিয়তিবাদ। আদর্শ মানে জীবনের কমপ্লিট কৌড, আর এর বাইরে কোন সত্য নেই। “আদর্শ” মানে অতীন্দ্রিয় শুদ্ধ ধারণা যা শ্রেষ্ঠ। তাই আদর্শকে শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিতে হয়। শ্রেষ্ঠত্বের জন্য যদি রক্তপাতের প্রয়োজন হয় আদর্শের অনুসারিরা সেটা করতে পিছপা হয়না। “আদর্শই মূল্যবান”; এই প্রত্যয়ের প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষকে আদর্শের নিচে ফেলে তাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে আদর্শের কোন গ্লানি নেই। আদর্শবাদীর কাছে আদর্শের মূল্য আছে মানুষের নেই।
ধর্মবাদীদের কাছে মানুষের চেয়ে ধর্ম বড় হয়ে উঠলেই ধর্মের নামে মানুষ খুন করে ফেলে অবলীলায়। মানুষের চেয়ে জাত বড় হয়ে উঠলেই কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে হিটলার মানুষ পুড়ায়। মানুষের চাইতে সমাজতন্ত্র বড় হয়ে উঠলেই খেমার রুজের মতো হিংস্র দানব গণহত্যায় মেতে ওঠে। মানুষের চেয়ে দল বড় হয়ে উঠলেই দলের অনুসারিদের দল রক্ষায় হয়ে উঠতে হয় হিংস্র, মৃত্যু ক্ষুধায় তড়পাতে থাকা পিশাচ, রক্তের নেশায় ঘুরতে থাকা ভ্যাম্পায়ার; অন্ধকারেই যার জীবন শুরু।
এখন সময় অন্ধকারের!!!! তাই অন্ধকারের শক্তিরা “আদর্শ” দেখে।
আলোর দিশারিরা মানুষ দেখে, শুধু মানুষ।