ইউরোপের নাস্তিক ঘৃণাজীবীদের আমার বিরুদ্ধে নীতিহীন শয়তানি প্রচারণা ও অভিজিৎ রায় কে নিয়ে আমার বাবার লেখা স্ট্যেইটাস।

অভিজিৎ রায়কে নিয়ে আমার বাবা শ্যামল ভট্টাচার্য একটা স্ট্যেইটাস দিয়েছেন, সকলের মতো আমিও পড়েছি। লাইক দিয়েছি। যদিও উনার সম্পূর্ণ লেখার সঙ্গে আমার অনেক জায়গায় ভিন্নমত আছে, তাও অভিজিৎের মৃত্যুতে তাঁর পিতার বন্ধু হিসেবে এই লেখাটার একটা আলাদা গুরুত্ব আছে।

কিন্তু এরপর ই শুরু হয়েছে বিশ্রী আক্রমণ। মুলত ইউরোপে বসবাসরত মুক্তমনা পরিচয় দেয়া নাস্তিক গোষ্ঠীর। এদের ভাষা অপমানজনক, মর্যাদাহানিকর। আসিফ মহিউদ্দিন সেই লেখার রেফারেন্স টেনে এক জায়গায় লিখেছে বাঘের পেটে খচ্চর, আরেক জায়গায় লিখেছেন; সিংহের পেটে ভেড়া। এই আসিফ মহিউদ্দিন শুধু ধর্ম এবং তাঁদের পয়গম্বরদের ই আক্রমণ করেননা, অন্য মানুষকেও ন্যুনতম মর্যাদা দিতে সক্ষম নয়। আরিফূর রহমান নামের আরেকজন আছেন, তিনি আমার নাম উল্লেখ করলে লেখেন পিনাকী টারে। মানে আমি মানুষ নই একটা বস্তু। আর দেশে আছেন কয়েকজন। একজন তার মধ্যে একজন অদিতি ফাল্গুনি। অদিতির কাজ একটাই খুঁজে খুঁজে দেখা আমি কী লিখেছি, তারপর সেটার ব্যাবচ্ছেদ করে দেখানো যে আমি আসলে একজন হেফাজতি।

আমার লেখা অনলাইনে আছে সেখানে সবাই কমেন্ট করতে পারেন। সেখানে এই ইউরোপীয় নাস্তিকেরা বিতর্কে আসছেন না। কিন্তু ঘৃণার বিষ উগড়ে উগড়ে দিচ্ছেন। এটার ও একটা কারণ আছে। কারণটা হচ্ছে একটা মিথ্যা কথাকে বারবার অনেকে মিলে বলে সেটাকে সত্য বানিয়ে ফেলা। এই কাজে তারা অনাকাংশেই সফল। তারা এটা মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন যে অভিজিৎ রায়ের হত্যাকে আমি জাস্টিফাই করেছি। কী ভয়ানক!!!!!!

এবার দেখুন অভিজিৎ রায় হত্যার পরে “অভিজিৎ” কে মেনশন করে আমার লেখাগুলি কী কী ছিল?

আমি প্রথম লিখি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ইংরেজিতে এক লাইন। “

“ আমার মনে হচ্ছে অভিজিৎ আর জীবিত নেই”।

এর পরে রাতে বাসায় ফিরে লিখিঃ

২৬ শে ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে

“অভিজিতের নিথর রক্তাক্ত দেহ যখন সাদা কাপড়ে ঢেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সি থেকে মর্গে নিয়ে গেল পারভেজ আলম ডুকরে কেঁদে উঠলো, অনন্য আজাদ আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না শুরু করলো। আমি বজ্রাহতের মতো দাড়িয়ে রইলাম। বাকি বিল্লাহর কাছে অভিজিৎ আর তাঁর স্ত্রীর আক্রান্ত হবার খবর শুনে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছুতে পৌছুতেই শুনলাম ততক্ষণে অভিজিৎ মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেছে।

একজন লেখকের কি নির্মম মৃত্যু। কী ভয়ানক!!!

অভিজিতের প্রকাশ্য শত্রু ছিল। অভিজিতকে হত্যার প্রকাশ্য ঘোষণা অনলাইনে অনেকেই দিয়েছে। অভিজিতের লেখাগুলো যারা অনলাইনে ফলৌ করতেন তাঁরা সেই মন্তব্য গুলো নিশ্চয় লক্ষ করেছেন। মুছে দেয়া না হলে সেগুলো এখনো আছে হয়তো। অভিজিতের বই বিক্রির জন্য রকমারিতে হামলা করার প্রকাশ্য ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি আইন আছে সেই আইন প্রয়োগ ও হচ্ছে কিন্তু অনলাইনে প্রকাশ্য হত্যার হুমকি সেই আইনে যেন অপরাধ নয়।

বাংলাদেশে সবচেয়ে সহজ টার্গেট একজন নাস্তিক। নাস্তিক মানেই আক্রমন যোগ্য, হত্যা যোগ্য। নাস্তিক কে প্রকাশ্য হুমকি দেয়া হত্যা করা যেন কোন অপরাধ নয়। নির্মম মৃত্যুই যেন তাঁদের প্রাপ্য।

ইতিমধ্যেই অনুমানে ব্লেইম দেয়া শুরু হয়েছে। নানা রাজনীতির ইকুয়েশনে মেলাতে চাইছেন এই হত্যাকাণ্ডের সাথে। আসুন আমরা কোন অনুমান না করি, পূর্ব অনুমানের ভিত্তিতে তদন্ত যেন না হয়। এমন একটা জটিল রাজনৈতিক সংকট কালে অনেক অন্ধকারের শক্তি সক্রিয় থাকে। অভিজিতের মতো একজন সহজ টার্গেট নাস্তিক কে যদি কোন অন্ধকারের শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বলি হতে হয় সেটায় অবাক হবার কিছু নেই।

আমি এই নির্মম হত্যার বিচার চাই। খুনিদের শাস্তি চাই।”

২৮ শে ফেব্রুয়ারি আমি লিখি

“এই স্কেচ প্রকাশ করেছে প্রথম আলো। পুলিশের সামনে দিয়েই অভিজিতের হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। কীভাবে এটা হয়? পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা স্বীকার ও করেছে পুলিশ সদস্য হামলা দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছে। ঘাতকরা যে নিরাপদেই পালাতে পেরেছে এর দায় কার?”

২৮শে ফেব্রুয়ারি আমি আরেকটি লেখা লেখি

“অভিজিৎ রায় আমার ফেইসবুক বন্ধু ছিলেন। গত বছর কোন এক সময়ে ধারাবাহিকভাবে মুলত বিদেশে অবস্থানরত তরুন নাস্তিক্যবাদীদের সাথে আমার কিছু একাডেমিক তর্কের প্রেক্ষিতে পর্যায়ক্রমে সকলের সাথেই ফেইসবুকের এই সম্পর্ক ছিন্ন করি, অভিজিৎ রায়ের সাথেও ফেইসবুকের সম্পর্কের ইতি ঘটে।

আমি অভিজিৎকে কখনো চোখের দেখা দেখিনি, তাঁর লেখার মাধ্যমেই তাঁকে যতটুকু চিনেছি। তরুন নাস্তিক্যবাদীদের সাথে আমার চিন্তার ভিন্নতা আছে, তার মুল কারণ আমি নাস্তিক নই, আমি অজ্ঞেয়বাদী; পাশাপাশি আমি তাঁদের চর্চার এবং চিন্তার প্রকাশের পথটাকে সঠিক মনে করিনা। এ সত্ত্বেও অভিজিতের বিপদে সাহায্য করার ইচ্ছায় ঢাকা মেডিক্যালে ছুটে যেতে আমি নৈতিক তাগিদ অনুভব করেছি।

কিন্তু গতকাল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ফিরে এসে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে অভিজিতের মৃত্যুতে দেয়া স্ট্যেইটাসের নিচে কারো কারো যেই উল্লাস দেখেছি সেটায় আমি বিহ্বল এবং মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছি। কী নিদারুণ মৃত্যুক্ষুধা কারো কারো মধ্যে।

বাংলাদেশে কেউ হেফাজত মরলে খুশী হয়, কেউ বিএনপি মরলে খুশী হয়, কেউ জামাত মরলে খুশী হয়, কেউ বিডিআরের অফিসার মরলে খুশী হয়, কেউ আওয়ামী লীগ মরলে খুশী হয়, কেউ নাস্তিক মরলে খুশী হয়, কেউ হিন্দু মরলে খুশী হয়, কেউ মুসলিম মরলে খুশী হয়, কেউ বাম মরলে খুশী হয়। কারণ আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করিনা। তাই সবার মৃত্যুতে বেদনাহত হওয়ার ক্ষমতা আমরা অনেকেই হারিয়ে ফেলেছি। আমরা মানুষকে ভালোবাসিনা, আমরা প্রাণের পক্ষে নই, প্রাণের সুরক্ষায় আমরা উৎসব করিনা; আমরা মৃত্যুর সেলিব্রেশন করি। আমরা আসলে জম্বি। ভেতরের মানুষটা মরে গেছে, অর্থহীন শরীর নিয়ে দিন কাটাই। মানুষ আমাদের কাছে জরুরী নয়, জরুরী “আদর্শ”। আমরা আমাদের তথাকথিত আদর্শের জন্য মানবতাকে ট্রেইড অফ করেছি। যেই আদর্শ মানুষকে ভালবাসতে শেখায় না, সেই আদর্শের মানুষকে দেবার কিছু নেই। প্রত্যেকটা মানুষ এক অবিচ্ছেদ্য মানবিক সত্তাকে শেয়ার করে, সেটার মর্যাদা হানী হলে সব মানুষের মর্যাদা হানী হয়। অভিজিতের মৃত্যুর প্রতিবাদ করতে হলে নাস্তিক হওয়ার দরকার নেই, মানুষ হলেই যথেষ্ট।

প্রিয় দেশবাসী ভালো করে তাকিয়ে দেখুন, নিহত হেফাজতি আর নিহত অভিজিতের রক্তের কোন তফাৎ নেই, ভালো করে দেখুন, দুজনেই ভিক্টিম, দুজনেই আপনার ভাই।”

২৮ শে ফেব্রুয়ারি আমি আরেকটা লেখা লিখি

““ইস্টিশন ব্লগে একটা লেখা দেখলাম শিরোনাম “অভিজিৎ হত্যার শিক্ষা : বাঙালী সাহায্যের হাত বাড়ায় না”। আমাদের সমস্যা হচ্ছে আত্ম ধিক্কার এবং আত্ম ঘৃণায় ভোগা। আর বিজ্ঞান ফেলে অনুমানে কথা বলা। বাঙালি সম্পর্কে এই ধারণা এবং অনুমান ভ্রান্ত। আমি এই বিষয়টা নিয়ে গতকালকে পৌস্ট দিয়েছি। আমার লেখাটি অনেক পুরনো কিন্তু এই মনস্তত্ত্ব বিচারে প্রাসঙ্গিক।”

অনুগ্রহ করে অপরাধবোধে ভুগবেন না!!

অভিজিৎ রায় এবং তাঁর স্ত্রী আক্রান্ত হবার সময়ে এবং তার পরে কিছু সময় পর্যন্ত তাঁদের কেউ এগিয়ে এসে সাহায্য করেনি। বিষয়টা দুঃখজনক, বেদনাদায়ক এবং অগ্রহণযোগ্য। কিন্তু এমন ঘটনা অভিনব নয়। অঘটন ঘটার কালে এই মনস্তত্ত্বের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। বিষয়টা নিয়ে আমি প্রথম লিখেছিলাম অধুনালুপ্ত আজকের কাগজে সম্ভবত ২০০৭ এ। পরবর্তীতে সেটা আমার বই “বালাই ষাট” এ সংকলিত হয়।

সফট কপি নেই, বই থেকে ছবি তুলে সেই দেড় পৃষ্ঠার নিবন্ধটি দিলাম। অঘটন ঘটার সময়ে মানুষের নির্লিপ্ত থাকার একটা ব্যাখ্যা পাবেন।”

এই ছিল অভিজিৎের মৃত্যু পরবর্তী আমার লেখাগুলো। কোথাও এমন কথা বলেছি যাতে মনে হয় আমিঅভিজিৎএর হত্যাকে জায়েজ করার চেষ্টা করেছি, “অভিজিৎএর নিন্দা করেছি, “অভিজিৎএর মর্যাদা হানী করেছি? 

এর পরে ৩রা মার্চ মুহাম্মাদ গোলাম সারোয়ার দীর্ঘ লেখা লেখেন। সেখানে তিনি প্রমাণ করার চেস্টা করেন আমি বাবাকে অতিক্রম করতে পারিনি। সুপ্রিয় সারোয়ার, আমি জীবনেও আমার বাবাকে অতিক্রম করতে চাইনা। সেই ইচ্ছা আমার নাই (পারিবারিক ভ্যালুজের মেটাফর)। কিন্তু আমরা দুজনে সম্পূর্ণ আলাদা এবং স্বাধীন মানুষ।

কিন্তু সারোয়ার, অভিজিৎের প্রসঙ্গ তুলে আমার বাবার কাধে বন্দুক রেখে আমার দিকে গুলি ছোড়ার মানে কী? একটি পরিবারের আভ্যন্তরীণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র সম্পর্ককে কলুষিত করার হীন বাসনায় বাবাকে পুত্রের বিরুদ্ধে আর পুত্রকে পিতার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়ার এটা কোন শয়তানি ঘৃণ্য চেষ্টা? আপনার শুধু অধঃপতনই হয়নি আপনি হিংস্র ও আক্রোশে অন্ধ হয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। আপনার এই অধঃপতনে দুঃখ প্রকাশ করার রুচিও আমার নেই।

এখানে দেখুন মুহাম্মাদ গোলাম সারোয়ার কী লিখেছেন সেখানে আমার বাবার লেখাও দেয়া আছে। পাঠক পড়ুন।

“সবাই পারেনা পিতাকে অতিক্রম করতে। সন্দীপ রায় পারেননি পিতা সত্যজিৎ রায়কে অতিক্রম করতে। পারেননি প্রখ্যাত কমিউনিস্ট প্রসাদ রায়ের পুত্র হাল আমলের সাংবাদিক অঞ্জন রায়। কে বলবে নিচের এই স্ট্যাটাস টি আমাদের ডা পিনাকীদা’র বাবার লেখা? দীর্ঘকায় পিনাকিদাও পারেননি তার বাবাকে অতিক্রম করতে। পড়ে দেখুন – বোঝা যাবে পিতা পুত্রের বোধের ফারাকটি!

“গত আটচল্লিশ ঘণ্টা থেকে অভিজিতের কথা আপনা আপনি চলে আসছে। ওর সঙ্গে একবার কথা বলার সুযোগ হয়েছিল ওদের মগবাজারের বাসায়। গিয়েছিলাম অজয়দার সঙ্গে দেখা করতে। সামান্য আলাপে চিনতে পেরেছিলাম একজন সাচ্চা মানুষকে। তাঁর মৃত্যু আমার কাছে এক বজ্র-নির্ঘোষী প্রতিবাদ–প্রতিবাদ ধর্মোন্মাদদের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ ফ্যসিবাদের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ তাবৎ শোষকদের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ ভাবরাজ্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে যুক্তিবিজ্ঞাববিরোধী অতিপ্রাকৃতবাদ, ঈশ্বরবাদ, দ্বৈতবাদ, অদ্বৈতবাদ, দ্বৈতাদ্বৈতবাদ প্রভৃতি নানা ভাববাদী দর্শনের বিরুদ্ধে, বিশুদ্ধ বিজ্ঞানের পথ ধরে। তাই সেই মানুষটির বিশাল প্রতিভা তাদের কাছে সহ্যাতীত ঠেকেছিল যারা পচাগলা ভাবরাজ্যের পদতলে কোন যুক্তি ছাড়াই মাথা বিকিয়ে দিয়েছে আর ভড়াটিয়া কিলারদের দিয়ে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে। বোকারা জানে না অভিজিতরা একা নয়, তারা একা একা আর এক থাকবে না। তাঁরা একদিন হিসাব চাইবে।

অভিজিৎ জানতো আক্রমণ আসবে। সে মারসেনারী নয়, সে মাঠের ফ্রন্টাল যোদ্ধা। তাকে কি করতে হবে সে খুব ভালো করে জানতো। তার জানা বাকী ছিল না যে প্রযুক্তিগত উন্নতির ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের চর্চা এবং শিল্প-সাহিত্য-মূল্যবোধ,–মানুষের ভাব্রাজ্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে অধ্যাত্মবাদের চর্চা দেশে পুরোপুরি ফ্যাসিবাদ গড়ে ওঠার ঈঙ্গিতই বহন করছে কেননা ইদানীংকালে ফ্যাসিবাদ হচ্ছে আধুনিক বিজ্ঞান আর অভ্যাত্মবাদের এক অদ্ভূত সংমিশ্রণ।

তাই, অভিজিৎ জেনেশুনে সাহসিকতার সাথে মধ্যমাঠ থেকে প্রতি-আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিল। হি ইজ আ ফলেন কমরেড। অভিজিৎ শহীদ হয়েছে। শহীদের মর্যাদা তাঁর প্রাপ্য। তাঁকে ঊনমান্যতা দেবার সাধ্য কারো নেই।”

– শ্যামল ভট্টাচার্য”

এবার পাঠক বিচার করুন। দুজন মানুষের বোধের তো তফাৎ থাকবেই। আমার আর আমার বাবার লেখা দুটো ভিন্ন আঙ্গিকে। আমি নিশ্চয় স্বাধীন মানুষ হিসেবে সব ঘটনার ব্যাখ্যায় নিজের বোধ বুদ্ধি খাটাবো। কিন্তু এই লেখার সুত্র ধরে আমাকে গালাগালি করার কারণ কী? কেন আমি আমার বাবার কথার পুনরুৎপাদন করলাম না? এই কারণে? সব পুত্রই যদি তার বাবা হয়ে ওঠে তাহলে সভ্যতা এগুবে কীভাবে? প্লেটোকে অতিক্রম করে যেতে হয়েছে গুরু সক্রেটিসকে, অ্যারিস্টটল অতিক্রম করে গেছেন গুরু প্লেটোকে। মার্ক্স অতিক্রম করে গেছেন হেগেলকে, শেখ মুজিব অতিক্রম করেছেন সোহরাওয়ার্দিকে। নাকি মুক্তমনাদের স্বপ্ন সব পুত্র পিতার চিন্তার নিগড়ে বন্দি থাকুক। এর চেয়ে বড় মৌলবাদীতা আর কী হতে পারে?

অভিজিৎ রায়ের মৃত্যু নিয়ে আমি আমার মতো করে লিখতে পারবো না? আমাকে হয় আমার বাবার লেখা অথবা এই ঘৃণা জীবী এবং শয়তানি বুদ্ধিতে ভরপুর তথাকথিত মুক্তমনাদের লেখা কপি পেস্ট করতে হবে? কী ভয়ানক!!!!!!

 

Share

One thought on “ইউরোপের নাস্তিক ঘৃণাজীবীদের আমার বিরুদ্ধে নীতিহীন শয়তানি প্রচারণা ও অভিজিৎ রায় কে নিয়ে আমার বাবার লেখা স্ট্যেইটাস।

  1. দাদা আপনার ব্লগে লাইক দেওয়ার অপশন থাকলে ভাল লাগতো (ব্যাক্তিগত)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter