জর্জ অরওয়েল ১৯৮৪ নামে একটা উপন্যাস লিখেছিলেন ১৯৪৯ সালে। সেখানে তিনি গল্পচ্ছলে দেখিয়েছিলেন কীভাবে সরকার কোন ঘটনা, শব্দ ও বাক্যের ওভার সিমপ্লিফিকেশন করে, শ্রুতিকটু পদের পরিবর্তে কোমলতর পদের প্রয়োগ করে, অর্থ পরিবর্তন করে, শব্দ সংকোচন করে, অর্থ ঝাপসা করে এমন এক ভাষা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলো যে ভাষা অর্থহীন, যে সেই ভাষা রাষ্ট্রের কার্যক্রম সংক্রান্ত কোন সংবাদ কমিউনিকেট করতে বা বুঝতে ব্যর্থ।
চমস্কি একই বিষয় বলেছেন তাঁর নেসেসারি ইলিউশন বইটিতে। আমরা বহুল ভাবে ব্যবহার করি গণতন্ত্র, পুঁজিবাদ, বাক স্বাধীনতা, সাম্য কিন্তু এগুলো বলতে আসলে কী বুঝায় সেটা নিয়ে কোন আলোচনা নেই। এগুলো শব্দ আসলে আমাদের জীবনে কী অর্থ বহন করে সেটা নিয়ে কোন আলোচনা নেই। এই পদ্ধতিকে চমস্কি বলেছেন, “গণতান্ত্রিক সমাজে চিন্তার নিয়ন্ত্রণ”।
আজকাল পত্রিকায় দেখবেন এমন কথা, “আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।“ আপনি দেখবেন না, কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে? এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কোন রক্তপাত বা হিংসার আশ্রয় নেয়া হয়েছে কিনা? কোন উল্লেখ নেই। একসময় থাকতো। আমরা জানতাম লাঠি চার্জ করা হয়েছে, বা গুলি ছোড়া হয়েছে। এখন এই শব্দগুলোকে সচেতনভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়। সমরিক অভিযানে ব্যবহার করা হয় “প্যাসিফিকেশন” বা “শান্ত করণ” বলে একটা শব্দ। কিন্তু এই শব্দটার পিছনে কী অশান্তি লুকিয়ে আছে সেটা আমরা দেখিনা।
একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, এমনকি আমাদের বুদ্ধিজীবীদের ব্যবহার করা অনেক বাক্য কোন কিছু মীন করেনা। এটাও সেই নেসেসারি ইলিউশনের প্রতিক্রিয়া। সেই ইলিউশন আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিকেও কিছুটা মুক এবং নন কমিউনিকেটিভ করে ফেলেছে এবং এভাবেই উনাদের বক্তব্যকে করে ফেলেছে শক্তিহীন। সেই কারণেই দরকার অল চ্যালেঞ্জিং র্যাশনালিজম। শব্দকে, বাক্যকে চ্যালেইঞ্জ করা যেজন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।