এরদোগানের বরমাল্য ইতিহাস অচিরেই শুকিয়ে যাবে

এরদোগান আজ ইতিহাসের এক মহাসন্ধিক্ষণে। যে বরমাল্য ইতিহাস তাকে দিয়েছে সেই মালা অচিরেই শুকিয়ে যাবে বলে আমার ধারণা। কেন? সেটা বলছি।

যার জন্য জনগন ট্যাঙ্কের ভয় তুচ্ছ করে রাস্তায় নেমে এসেছে, যার জন্য পার্লামেন্ট সব দল সর্বসম্মতভাবে ক্যুয়ের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে দেশে একটা গণতান্ত্রিক বিপ্লব সংগঠিত হয়ে গেছে। এই বিপ্লবের নেতা এরদোগান।

এরদোগান যেটা করতে পারতেন সেটা হচ্ছে; এই বিপ্লবের স্পিরিটকে কাজে লাগিয়ে রিকনসিলিয়েশনের ভিত্তিতে একটা পলিটিক্যাল কমিউনিটি গড়ার কাজে অগ্রসর হওয়া। লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে, তিনি সেই পথে হাটছেন না।

তিনি হাঁটছেন প্রতিহিংসার পথে। রাজনীতিতে ক্ষমতার প্রশ্নটা জরুরী। কিন্তু কতটুকু বল প্রয়োগ করতে হবে সেটা ঠিক করতে হয় নেতাকেই। তিনি শুধু ক্যুয়ের নেতাদের কৌর্ট মার্শাল করে বাকিদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে দিতে পারতেন। সেটা করলে উদাহরণও সৃষ্টি হতো আর জাতি ব্যাপকভাবে বিভক্ত হওয়ার বস্তুগত শর্ত তৈরি হতোনা। কিন্তু তিনি সেটা করছেন না। করছেন ব্যাপক হারে ধরপাকড় এবং নির্যাতন। বাদ যাচ্ছেনা বেসামরিক প্রশাসন আর বিচার বিভাগও। এই অবস্থা অনিবার্যভাবে দেশে একটা ব্যাপক ভিত্তিক বিভাজন সৃষ্টি করবে। যেই নজিরবিহীন ঐক্য সৃষ্টি হয়েছিল সেটা চুরমার হয়ে যাবে এই পদক্ষপগুলোতে অচিরেই।

তাহলে এই কাজটা এরদোগান করছেন কেন? করছেন, কারণ তিনি বা তার দল যা করতে চায়। সেটা তিনি বলেন না কৌশলের কারণে। তিনি চান ইসলামের একটা বিশেষ বয়ান কায়েম করতে। কিন্তু যেহেতু কৌশলের কারণে তিনি সেটা বলেন না। তিনি সেটাই বলেন যেটা বললে ক্ষমতায় থাকা যাবে। তাই তার ভেতরে কাজ করে একটা স্ববিরোধীতা। তিনি যখনই ক্ষমতাবান হয়ে উঠবেন তখনই তার সুপ্ত ইচ্ছা মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে।

এখন তাই হবে। এরদোগান ও একেপি ক্ষমতাকে সংহত করার পাশাপাশি তার লিবারেল পজিশন থেকে সরে আসবে। সেই লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

ইতিহাস এরদোগানকে যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল। পৃথিবীর খুব কম পলিটিশিয়ানদের কপালেই তা ঘটে। দুর্ভাগ্য এরদোগান নিজেই এটা বুঝতে পারলো না।

লেখাটির ফেইসবুক ভার্সন পড়তে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter