নতুন আইনে পুরোনো অপরাধের বিচার করা যায় না

ইন্টার্নী চিকিৎসককে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শাস্তি দিতে পারে কি? পারেনা। কেন পারেনা?

ইন্টার্নী চিকিৎসকেরা গ্রাজুয়েশন পরবর্তী নিবিড় প্রশিক্ষণে থাকেন বিভাগীয় প্রধাণের অধীনে। অসদাচরণের জন্য বিভাগীয় শাস্তি দিলে সেটা বিভাগীয় প্রধাণ দিতে পারেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে। ইন্টার্নী চিকিৎসকদের দণ্ড বিষয়ক আইনে লেখা আছে, শাস্তি দিতে হলে সেটা হতে হবে ডিসিপ্লিনারি কমিটির মাধ্যমে। ডিসিপ্লিনারি কমিটি, বিভাগীয় প্রধানকে এবং হাসপাতাল প্রশাসনকে টপকে একতরফাভাবে ইন্টার্নীদের মন্ত্রণালয়ের শাস্তি দেয়ার কোন এখতিয়ার নেই। এতে শিক্ষকের অমর্যাদা হয়, কর্ম শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়।

শাস্তি দেয়া হচ্ছে কীসের ভিত্তিতে? তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তো? সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করুন জনগন দেখুক।

যেকোন শাস্তি প্রদানের আগে এটা নিশ্চিত হতে হয় যে, অভিযুক্ত আগে থেকেই জানে এই অসদাচরণের কী শাস্তি হতে পারে। এটা জানা থাকলে শাস্তির আশংকায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অসদাচারন থেকে বিরত ও থাকতে পারতো। এই কারণেই কোন নতুন আইনে পুরোনো অপরাধের বিচার করা যায়না। অসদাচরণের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে সরাসরি ইন্টার্নীদের শাস্তি দেয়ার কোন নজীর নাই। এই নজিরবিহীন শাস্তি অনায্য। এমনকি যে শাস্তি দেয়া হয়েছে, সেই শাস্তির বিধান কোথাও লিখিত নাই, এমনকি ইন্টার্নীদের জন্য তৈরি করা বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের লগ বুকেও সেই শাস্তির বিধান নাই। তাই এই শাস্তি হাওয়া থেকে বানানো, অনায্য ও বেআইনি।

এই নজিরবিহীন কাজ কেন মন্ত্রণালয় করলো? মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রীর কী বিশেষ আতে ঘা লাগলো যে সবাইকে ডিঙ্গিয়ে এই শাস্তি ঘোষণা করতে হল? তিনি তো শপথ নিয়েছিলেন কোন অনুরাগ বিরাগের বশবর্তি হবেন না।

এটা স্পষ্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রী বিরাগের বশবর্তি হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ সেই রোগী তার নির্বাচনী এলাকার মানুষ। সেই নির্বাচনী এলাকার মানুষের প্রতি কয়েকজন ইন্টার্নীর অসদাচারণ তিনি ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছেন।

ইন্টার্নীরা অন্যায় করেনি আমি এটা বলছিনা, যদি অন্যায় বা বাড়াবাড়ি করে থাকে তাহলে এই শিক্ষাকালীন অন্যায়ের প্রতিবিধান করবেন তাঁদের শিক্ষক। তাঁদের শিক্ষকের হাতেই বিচারের ভার ছেড়ে দিন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অবশ্য একটা কাজ করতে পারে; নারী চিকিৎসককে “মাল” বলে সন্মোধন করা কুলাঙ্গারের নামে নারী নির্যাতনের মামলা দিতে পারে।

বাংলাদেশের কোন মানুষের নারীকে অবমাননা করা কারো পক্ষে দাঁড়ানো উচিৎ নয়। এ ব্যাপারে সবার জিরো টলারেন্স থাকতে হবে। নো কম্প্রোমাইজ এন্ড নো আর্গিউমেন্ট প্লীজ।

নারীর অবমাননার যেকোন প্রতিবাদ নায্য।

লেখাটির ফেইসবুক ভার্সন পড়তে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter