বগুড়ার অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ উদযাপনের ছবি। তাদের মিছিলের মুল ব্যানারে লেখা আছে “ব্যক্তিগত মালিকানার পৃথিবী বদলে সামাজিক মালিকানার মানবিক পৃথিবী গড়ে তুলুন”। যেভাবে কথাটা লেখা হয়েছে ব্যানারে এটা অমার্ক্সীয়। মার্ক্স এভাবে কথাটা বলেন নাই। অক্টোবর বিপ্লব তাদের কাছে ব্যক্তিগত মালিকানা উচ্ছেদের লড়াই। আর এটাই যেন অক্টোবর বিপ্লবের সারকথা। এতোদিন ধরে বিশাল কমিটি করে এতো আয়োজন করে বিপ্লব বার্ষিকী উদযাপন করা হচ্ছে কিন্তু কেন তারা উদযাপন করছে এই বার্ষিকী সেইটা তারা ভাবেনি।
মার্ক্সের মুল চিন্তা ছিল, প্রকৃতি ও মানুষ- এই দুই ধারণার পর্যালোচনা ও সম্পর্ক বিচার। এই সম্পর্ক বিচারের মধ্যে দিয়ে কারা এই বিদ্যমান সম্পর্কের রুপান্তর ঘটাতে পারে তার খোজ নেয়া।
ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যক্তিগত সম্পত্তির সুনির্দিষ্ট ধরণ ছিল। মার্ক্স লেখালেখির শুরুতে সম্পত্তি বলতে “সম্পত্তি সম্পর্ক” বুঝিয়েছেন। “পুঁজি” বইয়ে এই “সম্পত্তি সম্পর্ক” কে আরো স্পষ্টভাবে “উৎপাদন সম্পর্ক” বলেছেন। সুনির্দিষ্ট সামাজিক বিকাশের পর্বে সেই সমাজের বিদ্যমান “সম্পত্তি সম্পর্ক” বা “উৎপাদন সম্পর্ক” বদলানোই সামাজিক বিপ্লব। যেমন ধরুন, আমাদের দেশে জমিদারী প্রথার উচ্ছেদের জন্য আমরা ব্যক্তিগত সম্পত্তির একটা ধরণের উৎখাত করেছি। এটাও গণতান্ত্রিক বিপ্লব। কিন্তু ব্যক্তিগত মালিকানা কি গেছে? যায়নি।
“সম্পত্তি” আর “সম্পত্তি সম্পর্ক” দুটো পুরোপুরিভাবে আলাদা বিষয়। সম্পত্তি বলতে আমরা প্রচলিতভাবে যা বুঝি, টাকা-পয়সা, সম্পদ ইত্যাদি, মার্ক্সও সেটাই বুঝিয়েছেন। এবং নিশ্চিত থাকুন এই সম্পদের উপরে ব্যক্তি মালিকানার উচ্ছেদের কোন খায়েশ মার্ক্স বা লেনিনের ছিলনা।
একশো বছর পার হয়ে গেল, অক্টোবর বিপ্লব দেখে চোখ ধধায়ে গেল, কিন্তু বুঝলেন না অক্টোবর বিপ্লবটা কেন বিপ্লব ছিল, কোনদিন দেখার প্রয়োজন ও বোধ করেন নাই। যারা দেখায়ে দিতে চাইছে, আপনারা ভুল বুঝছেন তাদের পার্টি থেকে বের করে দিয়ে নিজের মুর্খতা ঢাকছেন। আর কত! এবার ক্ষ্যান্ত দেন। বাংলাদেশের বামপন্থাকে মুক্তি দেন।