ধর্ম বিদ্বেষী বলে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম ঘাড়ে চাপাতির কোপ কে নিয়েছিল? জানেন?
দার্শনিক স্পিনোজা।
ইহুদিদের সিনাগগে স্পিনোজার ঈশ্বর বিরোধিতার অভিযোগে সমাজচ্যুত করা হয়। এর আগে তাঁকে আর্থিক উৎকোচ দিয়ে বশে আনার চেষ্টা করেছিল সিনাগগ। স্পিনোজা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
সিনাগগের বহিস্কার দণ্ড পাঠের সময় একটানা শিঙায় করুণ বিলাপের সুর বাজতে থাকে। অনুষ্ঠানের শুরুতে সিনাগগের সব বাতি প্রজ্জলিত ছিল, বহিস্কার দণ্ড পাঠ করার সময় একে একে বাতিগুলো নিভিয়ে দেয়া হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত শেষ বাতিটিও নিভিয়ে দেয়া হয়। এই বাতি নিভিয়ে দেয়াটা প্রতীকী, যার অর্থ অভিযুক্তের আত্মিক জীবন ফুরিয়ে গেল।
এর কিছুদিন পরেই একজন ধর্মান্ধ ইহুদি (সম্ভবত একটা) চাপাতি নিয়ে ঝাপিয়ে পরে স্পিনোজার উপর। ঘাড়ে কোপ খেয়েও বেচে যান স্পিনোজা। এরপর তাঁকে প্রায় আত্মগোপনে থাকতে হয় এক চিলেকোঠায়। বেশিদিন বাচেননি তিনি। কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসে মানুষের লড়াইয়ের শক্তি দেয়ার মতো দর্শন তৈরি করেছেন স্পিনোজা, যেই দর্শন মানুষকে আজো আধুনিকতার নামে পুঁজিবাদের সমাজকে অতিক্রম করে যাওয়ার শক্তি যোগায়।
সিনাগগ বাতি নিভিয়ে যার আত্মিক মৃত্যু ঘোষণা করেছিল, সেই স্পিনোজা আমাদের হাতে আলো তুলে দেন পুঁজিবাদের দার্শনিক ভিতকে আঘাত করার।
যারা পুঁজিবাদকে অতিক্রম করে যেতে চায় তাদের কাছে মার্ক্স তো জরুরী বটেই, স্পিনোজাও কম জরুরী নয়। স্পিনোজা কেন জরুরী; সেটা আরেকদিন লেখার ইচ্ছা থাকলো।