“হিফাযতে ইসলাম” যার জন্ম ৫০ এর দশকের শুরুতেই।

মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে ইসলাম বইটা লিখতে গিয়ে আমাকে এমন অনেক বই পড়তে হয়েছে যার তথ্য হয়তো আমি এই বইয়ে ব্যবহার করিনি। কিন্তু এই পড়াশোনা আমাকে দারুনভাবে সমৃদ্ধ করেছে। বিশেষ করে বঙ্গীয় আলেম সমাজ সম্পর্কে। তাদের চিন্তাভাবনা, কর্মকান্ড, ইতিহাস তাদের আধ্যাত্ম চর্চা, লড়াই, সংগঠন সবকিছু নিয়েই। একটা উদাহরণ দেই।

আমার ধারণা ছিল হেফাজতে ইসলাম স্বাধীন বাংলাদেশের একটি সংগঠন এবং যার উদ্ভব ৭-৮ বছরের বেশী নয়।

অথচ আমি আবিষ্কার করলাম ৫০ এর দশকের শুরুতেই “হিফাযতে ইসলাম” নামে অরাজনৈতিক ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন স্থাপিত হয় বরেণ্য আলেম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আল্লামা তাজুল ইসলামের হাতে, যিনি পপুলারলি “ফখরে বাঙ্গাল” নামে পরিচিত ছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিখ্যাত জামেয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসা তার হাতেই তৈরি। আজকে যেমন হেফাজতের কেন্দ্র হাটহাজারি সেইসময়ে হিফাযতের কেন্দ্র ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া। হিফাযতের নেতৃত্ব প্রথমে ফখরে বাঙ্গালের হাতেই ছিল, ষাটের দশকে ঢাকায় সন্মেলন করে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয় হবিগঞ্জের মওলানা লুৎফর রহমানের কাছে।

আমরা আজকে যেটাকে “বেফাক” বলে জানি সেইটার ভ্রূণ তৈরি হয় ফখরে বাঙ্গালের হাতেই ষাটের দশকে বৃহত্তর কুমিল্লা ও সিলেটের মাদ্রাসাগুলোকে নিয়ে একটা কেন্দ্রীয় সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের মাধ্যমেই মাদ্রাসাগুলোর কেন্দ্রীয় বৃত্তি, পরীক্ষা গ্রহণ এবং মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম মনিটরিং করা হতো। এই বোর্ডের নাম ছিল “ইদারায়ে তালিমিয়া”। সদর দফতর ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া। পরবর্তীকালে এই ইদারায়ে তালিমিয়ার পথ ধরেই বেফাক প্রতিষ্ঠিত হয়।

তথ্যসুত্রঃ ফখরে বাঙ্গাল, আল্লামা তাজুল ইসলাম (র) ও সাথীবর্গ; হাফিয মোহাম্মাদ নুরুজ্জামান, ইসলামিক ফাউণ্ডেশন, ১৯৮৯, পৃষ্ঠা ৮৭

Share

One thought on ““হিফাযতে ইসলাম” যার জন্ম ৫০ এর দশকের শুরুতেই।

  1. I have read your writings and I have read articles on this topic in several articles from other sources. I got a lot of information from your writing, is there any other suggestions you can convey regarding the theme of your writing? so that I can get more and more complete information.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter