টিকুলের কাছে শোনা এই ভয়ানক দুঃসংবাদ দিয়ে আজকের দিনটা শুরু হল। বগুড়াতে নাকি শিবলীর জানাজার মাইকিং হচ্ছে।

যারা শিবলীকে চিনছেন না তাঁদের বলছি, শিবলী ছিলো আমাদের স্কুলের সেরা ছাত্র শুধু তাই নয় সেই সময়ের আমাদের প্রজন্মের সেরা ছাত্র। সেইসময়ে এস এস সি আর এইচ এস সিতে রাজশাহী বোর্ডে প্রথম। সে যা নাম্বার পেয়েছিলো সব বোর্ডের মধ্যে সেই নাম্বার কেউই ছুতে পারেনি। সেরা ছাত্র বলাটা তার জন্য কম হয়ে যায়, বলতে হতো আমাদের প্রজন্মের স্বপ্ন, কল্পনার আর সম্ভাবনার সেরা প্রোডাক্ট ছিলো শিবলী। শিবলীর আসলে আমাদেরকে আপনাদের সামনে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কথা ছিলো, এই যে এর নাম পিংকু, আমার সাথে পড়ে। সত্যি কথা বলতে কি এইটুকু বললেই একসময় বর্তে যেতাম।

শিবলীর সাথে শেষ দেখা বছর খানেক আগে, আমাদের ছোটবেলার বান্ধবী ঝিমলি এসেছিলো অ্যামেরিকা থেকে, আমার ওখানেই আমরা ঢাকার সব স্কুলের বন্ধুরা এক হয়েছিলাম। শিবলী একটু তাড়াতাড়ি ফিরে গিয়েছিলো। কে জানতো ওর ওপারে যাবারো এতো তাড়া ছিলো।

শিবলী একটা অদ্ভুত ভঙ্গিতে দৌড়াতো, হাত দুই পাশে ছড়িয়ে একটু দুলে দুলে। আমার সকাল থেকে এই ছবিটা ঘুরে ঘুরে আসছে মনে। সেই ছোটবেলার শিবলী হাসি হাসি মুখ করে দৌড়ে দৌড়ে আসছে আমার দিকে, সেই আমাদের বগুড়ার বাসার গলিতে; কিন্তু ওর দৌড়ানো কিছুতেই শেষ হচ্ছেনা, শেষ হচ্ছেনা।

এইতো কয়দিন বন্ধু, আমরাও আসছি একে একে। আমাদের জন্য একটা মাঠ বানিয়ে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে থাকিস, ঘুম ভাঙলেই দেখবি আমরা একে একে পৌছে গেছি ঠিকঠাক। তারপর খেলতে শুরু করবো আমরা সবাই। আমাদের সেই অনন্ত শৈশব আর আমাদের অসীম আনন্দকে তখন কেউ কেড়ে নিতে পারবেনা।

বিদায় বন্ধু, ভালো থাকিস।

লেখাটির ফেইসবুক ভার্সন পড়তে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter