১৯৬৭ সালে “দ্য টাইমস” এর সাংবাদিক খুব কনফিডেন্টলি লিখেছিলেন যে, তিনি ভারতের শেষতম নির্বাচনের সাক্ষী হয়ে রইলেন। কারন তার বিবেচনায় ভারতের গনতন্ত্র তার অন্তিমলগ্নে পৌছে গেছে। ভারতে আর গনতন্ত্র টিকবে না, এটাই ছিলো সেই সাংবাদিক সাহেবের অনুমান।
এই বিষয়টা অমর্ত্য সেন তার আর্গুমেন্টেটেটিভ ইন্ডিয়ান বইয়ে উল্লেখ করে বলেছেন, ভারতে মোটামুটি একটা গনতান্ত্রিক কাঠামো টিকে আছে, নির্বাচন নিরপেক্ষ হচ্ছে, গনমাধ্যমগুলি স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে, নাগরিক অধিকারের বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে, নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন হলে বিচার বিভাগ সক্রিয় ভুমিকা নিচ্ছে, এছাড়াও ভারতে কখনো সামরিক শাসন আসেনি। অর্থনৈতিক অগ্রগতি বা উন্নয়ন বলতে যা বোঝায় সেটাও চোখে পড়ার মতো।
তিনি কৌতুক করেই বলছেন, সেই সর্বনাশের ভবিষ্যতবাণী সফল হয়নি।
ভারতের গণতান্ত্রিক চর্চা নিয়ে এতো কিছু ভালো বলার পরেও অমর্ত্য সেন নিজেই বলছেন, আরো একটা বিষয় আছে যেটা না থাকার জন্য সামাজিক উন্নয়নের গতি ভারতে শ্লথ।
তিনি বলছেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সামাজিক সুযোগ এই দুই বিষয়ের সাথে যদি “রাজনৈতিক দাবী” তোলার অপ্রতুলতা থাকে তাহলে সামাজিক উন্নয়ন হয়না। তিনি বলছেন, ভারতীয় গনতন্ত্রের কিছু রাজনৈতিক সুবিধা থাকার পরেও প্রতিবাদী কন্ঠস্বরের দুর্বলতা আছে, তাই সামাজিক উন্নয়নের গতি ভারতে যেভাবে হওয়া দরকার ছিলো সেটা হয়নি।
তিনি বলছেন, “রাজনৈতিক কন্ঠস্বর” সামাজিক সমতার জন্য একটা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। তিনি উদাহরন দিয়েও দেখিয়েছেন, যে সমস্ত ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কন্ঠস্বরকে যথেষ্ঠ স্পেইস দেয়া হয়েছে সেখানেই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গেছে।
আমরা যে রাজনৈতিক পরিসরের কথা বলি, একটা রাস্ট্রের টেকসই ও দ্রুত উন্নয়নের জন্যই সেটা প্রয়োজন।
রাজনৈতিক প্রতিবাদ বা রাজনৈতিক কন্ঠস্বর কখনোই উন্নয়ন বিরোধি নয়, বরং উন্নয়নের জন্যই তার দরকার; এটা অমর্ত্য সেনের কথা। অথচ আমাদের শাসকেরা সবসময় এর উল্টোটাই আমাদের বুঝিয়ে এসেছেন।
One thought on “রাজনৈতিক প্রতিবাদ বা রাজনৈতিক কন্ঠস্বর কখনোই উন্নয়ন বিরোধি নয়, বরং উন্নয়নের নিয়ামক”
Thanks a lot and good jobs