বাংলাদেশের স্যেকুলার আর নাস্তিক কুল একটা জিনিস খুব ভালো পারে। সেটা হচ্ছে ঘৃণার চর্চা। সেটার অবশ্য একটা ঐতিহাসিক কারণ আছে। কারণটা হীনমন্যতা। উদাহরন দেই।
স্যেকুলারকুল এই ভুখণ্ডের যেই রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশী ঘৃণা ছড়িয়েছে সেটা হচ্ছে মুসলিম লীগ। এটা বলতে দ্বিধা নেই এই মুসলিম লীগ ইতিহাসের পরিক্রমায় একসময় গনবিরোধি অবস্থান নিয়েছে; কিন্তু তাই বলে তো তাঁর প্রগতিশীল গৌরবের ইতিহাস ম্লান হয়ে যায়না। সেটা হলে তো রাশান কমিউনিস্ট পার্টির নামেও ঘৃণা ছড়াতে হয়।
মুসলিম লীগ কী করেছে? মুসলিম লীগ সামন্ত সমাজ থেকে পূর্ববঙ্গকে মুক্তি দিয়েছে এবং পুঁজিবাদী রুপান্তরের পথে পূর্ববঙ্গকে অগ্রসর করে দিয়েছে, তাঁদের জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের আন্দোলনের মাধ্যমে। যেই সময়ে পূর্ববঙ্গের কমিউনিস্টরা জমিদারি রেখেই তেভাগার আন্দোলন করছিল।
মুসলিম লীগ জমিদারি উচ্ছেদের আন্দোলন করতে করতে একটা নিজেদের রাষ্ট্রই গঠন করে ফেলল। এই লড়াইয়ের বিপ্লবাত্মক উপাদানকে বাংলাদেশের স্যেকুলারেরা ভয় পায়। কারণ এই কাজ তো বামদের কাজ ছিল, সেই কাজ “মুসলমান” ডাক নাম নিয়ে মুসলিম লীগ করে ফেলল, এই গ্লানি থেকে স্যেকুলারেরা মুক্তি চায়, তাই মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে ঘৃণার চর্চা। পূর্ববঙ্গের জমিদারি উচ্ছেদের আন্দোলন মুলগত ভাবে ফরাসি বিপ্লবের সাথে তুল্য।
বলা হয় মুসলিম লীগ সাম্প্রদায়িক দল। তাই যদি হয় তবে মৌলানা ভাসানি, শেরে বাঙলা, বঙ্গবন্ধু, আবুল হাশিম, আবুল মনসুর আহমদের মতো এই ভূখণ্ডের শ্রেষ্ঠ অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আইকন মুসলিম লীগ করতেন কেন?