বামপন্থীরা বলছে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আন্দোলন একটা গণমুখী আন্দোলন। এটা জনগনের দাবী।
ঠিক কী থাকলে সেটাকে জনগনের দাবী বলা যায়? এই প্রশ্ন আমি বামপন্থীদের কাছে রাখতে চাই। মানে বামপন্থীরা যা গণমুখী বলে ঘোষণা দেবে সেটাকেই বিনা প্রশ্নে গণমুখী বলে মেনে নিতে হবে?
শহুরে ১৮% পরিবার গ্যাসের চুলা ব্যবহার করে রান্না করার জন্য। গ্যাসের দাম বাড়লে এই ১৮% পরিবারের উপরে প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে। পরোক্ষ প্রভাবে গ্যাসের দাম বারার কারণে ভোগ্যপণ্যের মুল্য বারার বিষয়টা সাধারণ মানুষ গ্যাসের দাম বাড়ার সাথে রিলেইট করতে পারবেনা। গ্রামে গ্যাসের চুলায় রান্না করে এমন পরিবার মাত্র ৩%। গ্যাসের দাম বাড়া একটি শহুরে মধ্যবিত্তের ইস্যু। এমনকি এটা শহুরে নিম্নবিত্তের ইস্যুও নয়। তাহলে ১৮% শহুরে মধ্যবিত্তের ইস্যুকে আমরা “গণ” ইস্যু বলবো? গ্যাসের দাম বাড়া নিয়ে আন্দোলন গণমুখী আর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইটা কী? সেটা আপনাদের গণমুখী লড়াইয়ের তালিকায় নেই কেন? সেই লড়াই কোথায়? সেই লরাই করছেন না কেন?
এই বামপন্থীরা আসলে দেশের শহুরে মধ্যবিত্ত, তাই এরা এই মধ্যবিত্তের ইস্যুকে সবার ইস্যু বলতে চায়। এরা নিজেদের দাবী করে গরীবের দল বলে, কিন্তু গরীবের জীবন, তার সংগ্রাম, আকাঙ্খার সাথে এদের ন্যুনতম যোগসুত্র নাই। গরীবের জীবন সম্পর্কে এদের ধারণা অনুমান নির্ভর।
দেখেন, এরা দাবী করে কৃষককে সার, বীজ, কীটনাশক স্বল্পমুল্যে দিতে হবে। আবার এরা বলে এরা সাম্রাজ্যবাদকে শত্রু গণ্য করে। সার বীজ আর কীটনাশক যে সাম্রাজ্যবাদের দোসর বহুজাতিক কোম্পানির কৃষি সরঞ্জাম, উপকরণ, বীজ, শস্য এবং খাদ্যের ক্ষেত্রে একচেটিয়া ব্যবসাকে শক্তিশালী করবে, সেটা তাঁদের মাথায় আসেনা। এরা বিপ্লবের নামে গনমুখীনতার নামে, বহুজাতিক কোম্পানির ও ব্যবসায়ীদের অধীনে বাংলাদেশের কৃষিকে জিম্মি করার প্রকল্প বাস্তবায়ন করে।
আর রাজনীতিতে করে কী? মুখে বলে সমাজতন্ত্র করবে আদতে করে মডার্নিজম। মডার্নিজম মানে পুঁজিবাদের ভাবাদর্শ। আজিব চিড়িয়া এইগুলা।
লেখাটির ফেইসবুক ভার্সন পড়তে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন