ভারতীয় কমিউনিস্টদের বর্ণবাদীতা।

“ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী)-এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সর্বোচ্চ নেতৃত্বের একজন মন্ত্রী একবার এই রাজ্যের একটি বিশিষ্ট কালী মন্দিরে গিয়েছিলেন এবং তিনি যখন মন্দির থেকে বেরিয়ে আসছেন তখন সেখানে জড়ো হওয়া সাংবাদিক তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “আপনি তো কমিউনিস্ট, অথচ দেবী মন্দিরে পূজা দিতে এসেছেন?” উনি উত্তরে বলেছিলেন-“আমার প্রথম পরিচয় আমি ব্রাহ্মণ এবং আমার দ্বিতীয় পরিচয় আমি কমিউনিস্ট”।

সূত্রঃ আমার জীবন কিছু কথা, কান্তি বিশ্বাস (তিনি সিপিএমের শিক্ষা মন্ত্রী ছিলেন দীর্ঘদিন), একুশ শতক, কোলকাতা, অক্টোবর ২১০৪, পৃষ্ঠাঃ ১৩২।

একজন কমিউনিস্ট ঈশ্বর বিশ্বাসী হতে পারেন, তার ধর্ম পালন করতে পারেন, এতে কোন বাধা নেই। কিন্তু কমিউনিস্টরা কি বর্ণবাদী হতে পারেন? জন্মসূত্রে পাওয়া উচ্চ বর্ণের অহংকার তো নিরেট রেইসিজম বা বর্ণবাদ।

কমিউনিস্টরা চায় শ্রেণীতে শ্রেণীতে বিভক্ত সমাজ উচ্ছেদ করে সাম্যের সমাজ গড়তে। যেখানে জাতপাত, অর্থনৈতিক অসাম্য থাকবেনা। হিন্দু সমাজের বর্নাশ্রম প্রথা থেকে উদ্ভুত উচ্চ বর্ণের জন্ম সুত্রে পাওয়া ব্রাহ্মণ পরিচয় তো পুঁজিবাদের বুর্জোয়া পরিচয়ের চাইতে পশ্চাৎপদ। আপনি পুঁজিবাদে অর্থবিত্তের মালিক হয়ে পারলে জন্মসুত্রে পাওয়া পশ্চাৎপদ অবস্থাকে আপনি উৎরে যেতে পারেন কিন্তু বর্নাশ্রমে সেটার সুযোগই নেই। আপনাকে ধরে নিতে হবে সে যেহেতু ব্রাহ্মণ, তাই সেই আপনার চাইতে উন্নত মানুষ। সেই পশ্চাৎপদ বর্ণাশ্রমের ব্রাহ্মণ পরিচয় একজন কমিউনিস্টের পরিচয়ের সাথে কোনভাবেই যায়না, এটা সাংঘর্ষিক। অথচ তিনি কি বিপুল গৌরবে তার কমিউনিস্ট এবং ব্রাহ্মণ দুই পরিচয়কেই ধরতে চান। তিনি দুদু আর তামাকু একসাথেই খাবেন।

Share

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter