“বেদের মেয়ে জোস্‌না” যেখানে ৯০ এর গন অভ্যুত্থানের ভাষাকে অবচেতনে বাঙময় করা হয় ।

আমরা তখন ছাত্র। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন তখন তুঙ্গে। এমন সময় সারা দেশ এক জ্বরে কাঁপতে শুরু করলো। এক সিনেমা জ্বরে। “বেদের মেয়ে জোস্‌না” (জ্যোৎস্না নয়) সিনেমাটি সারা বাংলাদেশ মাত করে দিল। ছেলে বুড়ো, শহুরে নাগরিক, ছাত্র, যুবক, গ্রামীণ কৃষক, কারখানার শ্রমিক সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লো সেই সিনেমা দেখতে। দল বেধে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ছাত্রীরা সেই সিনেমা দেখতে যায় আর গান গাইতে গাইতে ফেরে “বেদের মেয়ে জোস্‌না আমায় কথা দিয়েছে, আসি আসি বলে জোস্‌না ফাকি দিয়েছে।”

বুদ্ধিজীবীরা মাথা চুলকায়, কী হইল। পোলাপানের মাথা মাথা কি অঞ্জু ঘোষরে দেইখা খারাপ হইছে? মাথা চুল্কাইতে চুল্কাইতে টাক বানায়া ফেলল, কিন্তু বেদের মেয়ে জোস্‌নার এই অভাবনীয় সাফল্যের কারণ ধরতে পারলো না।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পর সবচেয়ে সফল পলিটিক্যাল সিনেমা বেদের মেয়ে জোস্‌না। এই সিনেমাই ৯০ এর গন অভ্যুত্থানের ভাষাকে অবচেতনে বাঙময় করেছিল। রাজকুমার আনোয়ার ছিল শৃঙ্খলিত গণতন্ত্রের প্রতীক আর জোস্‌না ছিল লড়াকু ছাত্র শ্রমিক আর কৃষকের ঐক্যের প্রতীক।

এই সিনেমার রিমেইক হয়েছিলো কোলকাতায়। সবাইকে হতাশ করেই সঙ্গত কারণেই ছবিটা তেমন ভালো করতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গে।

বাংলাদেশের সব স্তরের মানুষ খব সহজেই কোরিলেইট করেছিল সিনেমাটিকে তার লড়াইয়ের সাথে। সেই মানুষের চৈতন্যের খবর বুদ্ধিজীবীরা রাখেন না জন্যই তরুণরা অধঃপাতে যাচ্ছে মনে করে সেই দুঃখে মিছেমিছি অসময়ে উনাদের অবশিষ্ট চুলগুলো ছিঁড়েছিলেন।

বড়ই প্যাথেটিক।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter