কথাটা শুনতে শুনতে কান পচে খুলে পড়ে যাওয়ার জোগাড় হয়েছে, এটা বলতে শোনা যায় পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয়, বাংলাদেশের ভারতপ্রেমী স্যেকুলার ও বাংলাদেশের হিন্দুদের। অবশ্য এক সময়ে এটা আবার বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনারো একবার বলেছিলেন।
কথাটা হল “যারা ভারতকে উপহাস করে, ভারতের বিরোধিতা করে তাদের উচিত ভারতের পণ্য ব্যবহার না করা”। অথবা ঘুরিয়ে বলে, “ভারতের পণ্য ছাড়া বাংলাদেশের চলে না আবার ভারতের বিরোধিতা করে”।
ব্যাপারটা হল পণ্য বিনিময়, কেনাবেচা। বিনিময় মানে হচ্ছে, একটা পণ্য বেচে সেই অর্থ দিয়ে আর একটা পণ্য কেনা। এই বিনিময়ের বা এক্সচেঞ্জের মাঝখানে অন্য এক লোক বা অন্য এক দেশকেও জড়িয়ে নেয়া। যেমন বাংলাদেশ ইউরোপে গার্মন্টস বেচে ডলার নিয়ে এরপর সেই ডলার দিয়ে ইন্ডিয়া থেকে অন্য এক পণ্য কেনে।
তবে বাস্তবে এই পণ্য বিনিময় বা এক্সচেঞ্জটা হয় আরও জটিলভাবে তিন না, দশ বা একশহাত ঘুরে। এটাই এক্সচেঞ্জ বা বিনিময়ের নিয়ম। আর মাঝের এই একদুশ হাত বদলে যাদের যাদের সাথে বিনিময় হয়েছে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদেক কাউকে চিনিওই না, দেখাও হয় নাই। এক্সচেঞ্জ এতই জটিল।
কিন্তু মুল কথা কেউ মাঙনা নেয় নাই। পণ্যের বিনিময়ে অন্য পণ্য অথবা আন্তর্জাতিক মুদ্রা নিয়েছে – এভাবে এই এক্সচেঞ্জ সম্পন্ন হয়েছে।
কিন্তু বিনিময় দিকটা আড়াল করে প্রায়ই বলা হয় “আমাদের পণ্য ব্যবহার না করলে গতি নাই”।
এখানে বিনিময়ের মধ্যে মাঙনা কেউ নিচ্ছে এমন ইঙ্গিত ভুল ও মিথ্যা।
পণ্য বিনিময়ে কোন এক পক্ষ নির্ভরশীল হয় না। বিনিময় হলে দুজনেই পরস্পরের উপর নির্ভরশীল হয়। নাহলে একমাত্র বিনিময় না করলেই কেউ কারও উপর নির্ভরশীল না হতে পারে। তাই “আমাকে ছাড়া ওর চলে না”, অথবা “আমি দেই বলে খাচ্ছে, ওর চলছে” এই ধারণাগুলো ভুয়া অর্থহীন। কারণ একা কেউ কারও উপর নির্ভরশীল হয় না। ব্যাপারটা দয়া করারও না। পয়সা আর পণ্যের বিনিময় কেনা বেচা।
আপনাদের মনে থাকতে পারে, ২০০৭ সালে আইলা ঘুর্ণিঝড় হয়েছিল। প্রণব মুখার্জী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে হেলিকপটারে সরাসরি ঘটনাস্থলে উড়ে গিয়ে সহানুভুতি জানিয়েছিল। প্রণবের আগ্রহে ভারত কী করতে পারে এই প্রশ্নে ঠিক হয়েছিল, ভারত ৫ লাখ টন চাল আমাদের বিক্রি করতে পারে। প্রণব রাজি হয়েছিলেন, প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন পাচ লাখ টন চাল বিক্রি করবে ভারত। কিন্তু প্রতিশ্রুত সেই চাল আজও আসে নাই। কেন আসে নাই?
কারণটা তৎকালীন ভারতের হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন আমাদের সচিবালয়ের বারান্দায় আমাদের সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে খুবই অশালীন অকূটনীতিক কথা বলেছিলেন – “দাদা আমরা না খেয়ে তো আপনাদের দিতে পারব না”। মানে তারা খেয়ে যেটা বাঁচবে সেটা সে বিক্রি করবে। আর যদি বিক্রি করতে না পারে তাহলে পুরাটাই লস, ওই চাল ইঁদুর খাবে। মানে ব্যাপারটা মাঙনা দেয়া নেয়া নয়, বিক্রি। ভারত খেয়ে না না খেয়ে দয়া করে দিবে এমন কোন প্রশ্ন নয়। ভারত বিক্রি করুক আমরা চাইও নাই, প্রণব মুখার্জিই আগ বাড়িয়ে বিক্রি করতে চেয়েছিলো।
আমরা না কিনলে এই পণ্য বেচতি কোথায় রে বেক্কল।বেক্কল বুঝেও না যে, আমরা কাস্টমার। ট্রাম্প অস্ত্র বেইচ্যা সেই আনন্দে সৌদীতে গিয়া কাস্টমারের সামনে পাছা দুলায়ে নাইচ্যা আসছে। আমরা ভারতীয় পন্য রেগুলার কিনতেছি। তোরা এখন ফালতু আলাপ বাদ দিয়া প্রেসিডেন্টরে পাঠায়ে দে, সে শাহবাগে আইস্যা পাছা দুলায়ে নাইচ্যা যাক।