বিশ্বজিৎতের হত্যাকারীরা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে দোষী।

বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে চারজনের সাজা কমেছে আর দুইজন খালাস হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডটা এমন সময় সংগঠিত হয়েছিলো যখন জামাত শিবিরকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মারার ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছিলো। বিশ্বজিতকে জামাত শিবির মনে করেই কোপানো হয়েছিলো। যারা কুপিয়েছে তাঁরা টিভি ক্যামেরার সামনেই কুপিয়েছে এবং নিজেদের লুকাবার চেষ্টা করেনি। এই শিবির জামাত কোপানোর বিষয়ে যে রাজনৈতিক, সামাজিক সম্মতি তৈরি করা হয়েছিল ক্ষমতার উৎসাহে তার কারণেই এই বেপরোয়া হত্যাকাণ্ডে ছাত্রলীগের খুনিরা কোন আড়াল নেয়ার চেষ্টা করেনি।

কিন্তু মুশকিল হয়ে যায় যখন ঘটনাচক্রে বিশ্বজিৎ একজন হিন্দু হয়। একজন হিন্দু বিশ্বজিতকে শিবির বা জামাত বলে তো আর প্রমাণ করা যায়না। তাই এই হত্যাকাণ্ড সরকারের জন্য বিব্রতকর একটি ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। এই হত্যাকাণ্ডের দায় থেকে সংশ্লিষ্টদের দায়মুক্তি দেবার জন্য সরকারের ভেতরের একটি মহল সবসময় সক্রিয় ছিল। বিশ্বজিতের ময়নাতদন্ত আর সুরতহাল রিপোর্ট এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যেন তা ঘটনার সাথে না মেলে তাই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ থাকার পরেও সুরতহাল ও ময়নাতদন্তে আঘাতের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে আসামিদের জবানবন্দি ও সাক্ষীদের বর্ণনার মিল পায়নি আদালত বলেই শাস্তি মওকুফ আর খালসের ঘটনা ঘটেছে।

আসামী পক্ষের আইনজীবি বলেছে, “এ মামলায় চাক্ষুস কোনো সাক্ষী নেই। ভিডিও ফুটেজের উপর ভিত্তি করে সাজা দেওয়া হয়েছে।” ভিডিও ফুটেজ যদি না থাকতো আর যদি বিশ্বজিৎ জামাত শিবির হতো বা নিদেন পক্ষে মুসলিম হতো, তাহলে কি আদৌ তার হত্যার কোন বিচার হতো? জামাত শিবির হলে তাকে এভাবে কুপিয়ে মারা যায় এই বয়ান যারা তৈরি করেছে বিশ্বজিৎ হত্যার দায় সেইসব নেপথ্য কুশীলবদের। এরা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে দোষী। একদিন বাংলাদেশে সেই নেপথ্যের কুশীলবদের বিচার হবে।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter