বামপন্থীরা আওয়ামী লীগের মতোই ফ্যাসিস্ট!!

স্ট্যালিন নাটকটা বামপন্থীরা মঞ্চস্থ করতে দিতে চায়না। খোদ নাটকের হলেই শ্লোগান দিয়ে তাঁরা নাটকের মঞ্চায়ন ভণ্ডুল করে দিয়েছে। এমনকি পরবর্তী মঞ্চায়ন যেন হতে না পারে সেইজন্য নটকের হলের সামনে বিক্ষোভ করেছে। তাদের অভিযোগ স্ট্যালিনকে কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিস্ট শাসক হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে, তাই নাটকের নাট্যকার আর অভিনেতারা সাম্রাজ্যবাদের দালাল।

আরেকদল অতোখানি নির্লজ্জ হতে পারেননি তাই রুচিবাগিশবাদী হয়ে নাটকের জাজমেন্টাল সমালোচনা করছেন। তাঁরা এই নাটককে দুর্গন্ধময় নর্দমার সাথে তুলনা করছেন।

স্ট্যালিন সাম্প্রতিক পৃথিবীর ইতিহাসে একজন গুরুত্বপুর্ণ রাজনৈতিক চরিত্র, সেটায় কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু তিনি ইতিহাসের চরিত্র; সেই চরিত্র চিত্রনে নানা ভাষ্য থাকাই স্বাভাবিক। নাটকে চিত্রিত চরিত্র সম্পর্কে তাঁদের সমালোচনা থাকতেই পারে। সেটা তাঁরা করছেন না।

স্ট্যালিন তো কোন অপাপবিদ্ধ পবিত্র চরিত্র নয়। স্ট্যালিন একজন কতৃত্ববাদী শাসক তো ছিলেনই, শুধু তাই নয় একজন নিষ্ঠুর নির্মম শাসকও ছিলেন। পলপট আর খেমার রুজেরা যা যা করেছে সেটা তো স্ট্যালিনের নিপীড়ক রাষ্ট্রের মডেল থেকেই করা। স্ট্যালিন যা যা করেছে সেটা তো মোদ্দা কথায় ক্রাইম এগেইন্সট হিউম্যানিটি। অন্যান্য রাজনৈতিক নিপীড়নের কথা বাদ দিলেও স্ট্যালিন লক্ষ লক্ষ মানুষকে জোর করে শ্রম শিবিরে নিয়ে গিয়ে দাস হিসেবে ব্যবহার করেছে।

বামপন্থীরা কি চায়, যে স্ট্যালিন সম্পর্কে শুধু তাঁদের ভাষ্যই সবাইকে মেনে চলতে হবে? স্ট্যালিনকে পবিত্র ভাবতে হবে? স্ট্যালিনকে সমালোচনার উর্ধে ভাবতে হবে? স্ট্যালিন যদি এই বামপন্থীদের হিরো হয় তাহলে পলপট এদের হিরো নয় কেন?

এরা শিল্পের দোহাই দিয়ে থেমিস রক্ষা করতে চায়, আবার সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দোহাই দিয়ে স্ট্যালিনের ফ্যাসিস্ট ভাবমুর্তি রক্ষা করতে চায়।

আজকে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্ট্যালিন কোন অর্থে প্রাসঙ্গিক? আজকের সাম্রাজ্যবাদ যখন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের বয়ানে ইসলাম বিদ্বেষ নিয়ে হাজির হয় তখন বাংলাদেশের বামপন্থীরা তো তার স্থানীয় বরকন্দাজ হয়।

সাম্রাজ্যবাদের যে কালচারাল এক্সপ্রেশন যখন ইসলাম ধর্মের ধর্মীয় চরিত্র নিয়ে কার্টুন করে তখন বামপন্থীরা সেটাকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বলে দাবী করে। এরাই সকাল সন্ধ্যা আল্লামা শফিকে নিয়ে কৌতুক করে, কিন্তু নাটকে একটা রাজনৈতিক চরিত্র নিয়ে পলিটিক্যান ইন্টারপ্রিটেশন মানতে চায়না।

আওয়ামী ফ্যাসিবাদ যেভাবে বাংলাদেশের ইতিহাসের তার নিজস্ব বয়ানের বাইরে কিছুই সহ্য করেনা, লেখক প্রকাশকেরা বই প্রত্যাহার করে পিঠ বাচায় ঠিক সেভাবেই বামপন্থীরা তার পার্টির বয়নের বাইরে কোন বয়ান সহ্য করেনা। চরিত্রগত দিক থেকে এরাও আওয়ামী লীগের মতোই ফ্যাসিস্ট।

লেখাটির ফেইসবুক ভার্সন পড়তে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter