আমি ১৩ ই জুন ২০১৩ তে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম অমিতা মালিকের দ্য ইয়ার অব দ্য ভালচার কে উদ্ধৃত করে। স্ট্যাটাসটা ছিল এইরকম।
এই বাক্যটি পেয়েছিলাম বিডিনিউজের একটা প্রবন্ধে, সেখানে বাক্যটির রেফারেন্স দেয়া ছিল। সেই সময় ডাক্তার আইজু নামের নিক থেকে সারাক্ষণ আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করা হত। ডাক্তার আইজু কমেন্টে লেখে।
ডাক্তার আইজু আমাকে একটা কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছে এটা বুঝতে পারলাম যখন মুল বইটা জোগাড় করতে গেলাম। বাংলাদেশের পাব্লিক লাইব্রেরি, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর, ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির নিজস্ব সংগ্রহ কোথাও নাই। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যারা কাজ করে তাঁদের সাথে দেখা হলেই জিজ্ঞেস করি বইটার কথা। না নাই। কারো কাছেই নাই। বইটি ওরিয়েন্ট লংম্যান প্রকাশনার সেটাও বিক্রি হয়ে গেছে নতুন মালিকের কাছে। সেই নতুন মালিকের কাছে যোগাযোগ করলাম। বইটা তাঁদের আর্কাইভে নাই। কোলকাতার সরাকারি লাইব্রেরিতে খোঁজ নেয়ালাম আমার এক বন্ধুকে দিয়ে; না নাই। নিজে খোঁজ নিলাম, দিল্লি আর চেন্নাইয়ের লাইব্রেরিতে। না নাই।
শেষে একটা কপির খোঁজ পেলাম ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে। সেই সময় আমার এক কাজিন ইংল্যণ্ডে পড়াশোনা করতো। তাকে দিয়ে বইটির কপি জোগাড় করার চেষ্টা করলাম। লাইব্রেরি বইটা পড়তে দেয় কিন্তু কপি করতে দেয়না। আমি দুটো পৃষ্ঠার ছবি তুলে এনে দিতে অনুরোধ করেছিলাম। সেটাও লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ করতে দেয়নি। ইংল্যান্ডে থাকেন এমন যার সাথেই সম্পর্ক এবং অনুরোধ করা যায় তাকেই বইটার একটা কপি এনে দিতে বলতাম বৃটিশ লাইব্রেরি থেকে। কোন লাভ হয়না। যখন প্রায় হাল ছেড়ে দিচ্ছিলাম সেই সময় দেবদুতের মত একজন নাছোড়বান্দা প্রিয়জন জানালো বইটার একটা পুরনো কপি পাওয়া যেতে পারে। আমি হাতে চাঁদ পেলাম। বইটা শেষ মেষ হাতে আসলো। বিজয় চৌহান বলে এক ভদ্রলোকের সংগ্রহে ছিল বইটা। বইয়ের ভিতরে নাম লেখা। সম্ভবত তিনি বা তাঁর আত্মীয়স্বজন বইটা বেঁচে দিয়েছেন অনলাইনে।
বইটায় খুজলাম ওই অংশটা। খুজে পেলাম। রেফারেন্সটাও ঠিক ঠাক আছে। পৃষ্ঠা নাম্বারেও কোন ভুল নাই। স্ট্যাটাসে উল্লেখিত উর্দু বাক্যটি তৃতীয় প্যারায় দেখুন।
ডাক্তার আইজু একটা ধন্যবাদ পেতেই পারে। কারণ সেই চ্যালেইঞ্জ না দিলে এমন গুরুত্বপূর্ণ বইটার কোন কপি হয়তো বাংলাদেশে থাকতো না। আর আমি তিনবছর পরে প্রমাণ দাখিলের দায় থেকে মুক্তিও পেলাম।