বাংলা ভাগে দায় কার?

১৯৪৭ এ ভারত ভাগ হওয়ার সাথে বাঙলা ভাগ হইছে। সেইসময়ে আমাগো পুর্বপুরুষেরা তাগো বিবেচনায় যেইটা ভালো মনে করছেন সেইটা করছেন। এই ইতিহাসের দায় আমরা উত্তরপুরুষেরা মাইন্যা নেয়া ছাড়া কোন উপায় নাই।

কিন্তু বাঙলা ভাঙা বিষয়টারে একটা অতি খারাপ কাজ বইল্যা একটা বাম ও স্যেকুলার বয়ান চালু আছে। সেই বয়ানের মুল ভাষ্য হইতেছে, মুসলমানেরা তাগো জন্য আলাদা রাষ্ট্র চাইছে জন্য বাঙলা ভাগ হইছে।

কিন্তু বাঙলার মুসলমান নেতারা কী বাঙলা ভাগ চাইছে? না চায় নাই। চাওয়ার কোন কারণ ছিলনা, মুসলমানেরাই ছিল বাংলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ। ভোট নিয়া সরকার গঠন করলে মুসলমান নেতারাই প্রধানমন্ত্রী হয় অবিভক্ত বাঙলায়।

বাঙলা ভাগের দাবী করেছিল হিন্দু ভদ্রলোক শ্রেণী, কারণ এই মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙলা প্রদেশে তারা তাঁদের কোন ভবিষ্যৎ দেখতে পায়নি। সেইসময় বাঙলায় হিন্দু প্রধান অঞ্চলগুলোতে যেমন, বর্ধমান, হুগলী, হাওড়া, কলকাতা, চব্বিশ পরগনা, বাকুড়া, মেদিনীপুর ও বীরভূমে বাঙলা ভাগ করার জন্য তীব্র আন্দোলন গড়ে ওঠে। হিন্দু নেতাদের মধ্যে শরত বসু মুসলমান নেতাদের সাথে ভারত পাকিস্তানের বাইরে আলাদা বাঙলা রাষ্ট্র গড়ে তোলার চেষ্টা করলেও তিনি নিজের ধর্মের লোকদের কাছে থেকে এর কোন সমর্থন পাননি।

১৯৪৭ সালের শুরুতে বেঙ্গল আইনসভাকে দুইভাগে ভাগ করা হয়। একভাগে থাকে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলাগুলির নির্বাচিত সদস্য, আর আরেকভাগে থাকে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলাগুলির নির্বাচিত সদস্য। ওই একই বছরের ২০ শে জুন আইনসভার দুই অংশ আলাদাভাবে বাঙলা ভাগের বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য ভোট দেয়। ঐতিহাসিক এই ভোটে আইনসভার হিন্দু ভাগের অধিকাংশ সদস্য বাঙলা ভাগের পক্ষে ভোট দেয়। আর মুসলমান অংশ নিরঙ্কুশভাবে বাংলাকে অবিভক্ত রাখার পক্ষে ভোট দেয়। সেদিনই বাঙলার ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়ে যায়।

কিন্তু বাঙলা ভাগের দায় কেন বাম আর স্যেকুলারেরা মুসলমান নেতাদের দেয়, সেই প্রশ্ন তাঁদের করা উচিৎ। তাঁদের কাছে কি কোন উত্তর আছে এই প্রশ্নের?

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter