বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে, তার গতি প্রকৃতিকে বুঝতে হলে জাতীয় রাজনীতিকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে রেখে বুঝতে হবে। এটা সত্যিই যারা করতে পারেননা, বা বাংলাদেশের রাজনীতির মুল দ্বন্দ্বকে মৌলবাদ আর জাতীয়তাবাদীদের অমীমাংসিত দ্বন্দ্বের ন্যারেটিভে দেখতে চান তাঁদের রাজনীতি বা বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তা নেহাতই অন্ধের হস্তী দর্শনের মতো অবস্থা।
বাংলাদেশ বিশ্বের পরাশক্তি গুলোর কাছে এত জরুরী কেন? তিনটি মহাশক্তি বাংলাদেশের বিষয়ে আগ্রহী। মুল আন্তর্জাতিক অবজেক্টিভ আছে অ্যামেরিকার। কী সেটা? অ্যামেরিকা ভারতকে না চটিয়ে এই অঞ্চলে চিনের প্রভাবকে খর্ব করতে চায়। খুব সিম্পল। বাংলাদেশের সমুদ্রপথই চিনের দুর্বল সীমান্ত তিব্বতে যাওয়ার সংক্ষিপ্ততম পথ। এই রুটে অ্যামেরিকা অ্যাকসেইস চায়। চিন তার এই দুর্বল সীমান্তে কোনভাবেই অ্যামেরিকাকে অ্যাকসেইস দেবেনা। তাই বাংলাদেশকে নিজের মতো করে এই তিন পরাশক্তি পেতে চায়।
এই খেলায় জেতার জন্য পরাশক্তিরা মরিয়া। এর জন্য বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর স্বপ্ন নিয়ে কেউ বসে নেই। ভারত চায় একটা ভারত বান্ধব নিও লিবারেল সরকার। আর অ্যামেরিকা চায় একটা অ্যামেরিকা বান্ধব নিও লিবারেল সরকার। চিন চায়, যেই আসুক তার তিব্বত সীমান্ত যেন অরক্ষিত না হয়ে পড়ে বঙ্গোপসাগরে কারো একছত্র আধিপত্যের কারণে।
এই খেলায় পাকিস্তান নেই। তথাকথিত জঙ্গিরা এই খেলায় ফুটনৌট, মুল টেক্সট নয়। ঘটনা প্রবাহকে লার্জার ন্যারেটিভে দেখতে পারাটা এক ধরণের পরিপক্কতা। এই পরিপক্কতা দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশের তথাকথিত স্যেকুলারদের মধ্যে অনুপস্থিত। প্যাথেটিক।