“নৈতিকতা” কেন জটিল ও গোলমেলে ধারণা

পৃথিবীতে সবচেয়ে গোলমেলে বিষয় হচ্ছে “নৈতিকতা” সম্পর্কিত ধারণা। প্লেটোর রিপাবলিক শুরু হয়েছে “ন্যায় কী” সেটা খোঁজার মধ্যে দিয়ে। দিস্তা দিস্তা কাগজ তখনও খরচ করতে হয়েছে, আজকেও হচ্ছে। কিন্তু কোনটা নৈতিক আর কোনটা অনৈতিক সেটার বিশ্লেষণ শেষ হচ্ছেনা। তবে একটা বিষয়ে পৃথিবীর তাবৎ গ্রেট ব্রেইন একমত হয়েছেন, সেটা হচ্ছে নৈতিকতার কোন সার্বজনীন মাপকাঠি নাই। উনারা কাজটা শেষ করে করে গেলে আমাদের সুবিধা হতো। এতো ঝামেলা হতো না। কিন্তু কাজটা কখনো শেষ হবেনা। আমরা বড় জোর ওয়ার্কিং ডেফিনেশন বানিয়ে কাজ চালাতে পারি। নৈতিকতার প্রশ্নে চূড়ান্ত ফয়সালা হয়ে গেলে, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ আর মাহমুদুর রহমানের কাজ গুলো আমরা সেই স্কেলে মেপে বলতে পারতাম, অ্যামেরিকার গোপন দলিল, বিচারপতির স্কাইপ সংলাপ প্রকাশ আর ব্লগারের লেখা প্রকাশ একই বিষয়। স্কিন্তু আমরা সেটা বলতে পারিনা। কেন পারিনা? তাহলে আমরা কোন কাজের নৈতিক বৈধতা খুঁজবো কীভাবে?

সেটারও উপায় আছে। কোন কাজের নৈতিকতা দেখা হয় উদ্দেশ্য দিয়ে বিধেয় দিয়ে না। মানে “কজ” দিয়ে “এফেক্ট” দিয়ে না। কজ টা যদি বৈধ হয় তবে সেই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য “কাজটাও” বা এফেক্ট টাও বৈধ হয়ে যায়। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ক্র্যাক প্লাটুনের হামলা বৈধ কারণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বৈধ। জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের গোপন নথি ফাঁস বৈধ কারণ একজন নৈরাজ্যবাদী হিসেবে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ মনে করে রাষ্ট্রের নিপীড়ক রূপটা বজায় থাকে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার জন্য। সেই নিপীড়ক রূপ কে আঘাত করতে হলে গোপনীয়তাকে আঘাত করতে হবে।

এখন আসুন দেখি, স্কাইপ সংলাপ ফাঁসের “কজ” বা উদ্দেশ্য কী ছিল? “কজ” ছিল যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রশ্নবিদ্ধ করা। এইতো? এই ‘কজ” টা কি বৈধ?

ব্লগের লেখা প্রকাশের “কজ”বা উদ্দেশ্য কী ছিল? যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবীতে উত্তাল শাহবাগের বিপরীতে সাধারণ মানুষকে ক্ষেপীয়ে দেয়া। এই “কজ” টা কি বৈধ?

এবার আসুন দুই নেত্রীর টেলিফোন আলাপ ফাঁস করা প্রসঙ্গে। সেটা যেই করে থাকুক না কেন? এটার বৈধতা খুঁজতে আমরা আসুন “কজ” খুঁজি। কেন এটা ফাঁস করা হোল? তাহলেই উত্তর পাবো এটা নৈতিক নাকি অনৈতিক।

লেখাটির ফেইসবুক ভার্সন পড়তে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter