মেটাফিজিক্স অব প্রেজেন্স টা কী? মেটাফিজিক্স বলতে চিন্তার ইতিহাসে কী বুঝায় সেটা জানা দরকার। মেটাফিজিক্স Transcendental signified (ট্র্যান্সেডেন্ট্যাল সিগনিফাইড) বা তুরীয় বা অতীন্দ্রিয় বিষয় নিয়ে আলাপ করে। মেটাফিজিক্স অব প্রেজেন্স এই ধারণা অনুসারে সমস্ত দার্শনিক আলোচনার পশ্চাতে আছে “ঈশ্বরের শব্দ” যা সব শব্দকে অর্থ প্রদান করে। যেমন, আমি যখন আপনার সাথে কথা বলি তখন আমি আমার ইনার সেলফকে শব্দ দিয়ে মূর্ত করে তুলি, আমার চিন্তা, আমার আবেগ এমনকি আমার অন্তরাত্মাকে শব্দের মাধ্যমে আপনার কাছে তুলে ধরি। খ্রিস্টিয়ান থিওলজিসিয়ানদের বিশ্বাস অনুসারে উচ্চারিত শব্দ, ঈশ্বরের সন্তান এবং লোগো হচ্ছে ঈশ্বরের নিখুঁত প্রকাশ। লোগো মানে হচ্ছে অর্থ; সত্য, রিজন, এবং আইন। গ্রীকরা মনে করতো লোগোস হচ্ছে মানব মনের গভীরে, কথার মধ্যে, মহাবিশ্বের মধ্যে লুকিয়ে থাকা কসমিক প্রিন্সিপল বা মহাজাগতিক নীতি। আর উচ্চারিত শব্দ আসে আত্মা থেকে তাই সেটা বিশুদ্ধ। তাই সেখানে ঈশ্বর বর্তমান, ঈশ্বর প্রেজেন্ট।
আবু জাফর ওবায়দুল্লার, আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি কবিতায় আছে মেটাফিজিক্স অব প্রেজেন্স। লক্ষ্য করুনঃ
“জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ কবিতা,
কর্ষিত জমির প্রতিটি শস্যদানা কবিতা।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে ঝড়ের আর্তনাদ শুনবে।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে দিগন্তের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে আজন্ম ক্রীতদাস থেকে যাবে।
আমি উচ্চারিত সত্যের মতো
স্বপ্নের কথা বলছি।“
জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ……………………আমি উচ্চারিত সত্যের মতো……………………- মেটাফিজিক্স অব প্রেজেন্স।
এই যে প্রেজেন্সের জন্য আকুলতা সেটাই মুখের শব্দকে সেন্ট্র্যাল করে লিখিত রুপকে মারজিন্যাল করেছে। দেরিদা বলেছেন, পাশ্চাত্য ট্র্যাডিশন, পাশ্চাত্য লগোসেন্ট্রিসিজমের ইতিহাস একটি বিশাল মেটা ফিজিক্স অব প্রেজেন্স।
One thought on “দেরিদা-৪”
দেরিদা 3 কোথায়?