দিস ইজ মাই কান্ট্রি, রাইট অর রং …..

কথা সাহিত্যিক জাকির তালুকদাররে আমি পাঠ করি, সাহিত্য বুঝনের আশায় না, তয় অন্য কিছু শেখার লাইগ্যা। ইদানিং মন দিয়া পাঠ করতেছি। শিখতেছি ম্যালা কিছু, বিশেষ কইর‍্যা স্যেকুলার মনো কাঠামো। যেমন তিনি কাল লিখছিলেন, বাকশাল কতো ভালো আছিলো! আমি তহন মনের চক্ষে জাকির তালুকদাররে দ্যাখতে পাই। অনেক যত্নে তিনি বহুদিনের লুকানো গলিত শবের কফিন খুলতেছেন, মাঝে মাঝে ডুকরাইয়া কানতেছেন, আর বাকশালের দুর্গন্ধ আতর মনে কইর‍্যা নিজের গায়ে মাখতেছেন। বড়ই হৃদয় বিদারক দৃশ্য। আমারো তখন চিক্কুর পাইড়া কানতে ইচ্ছা করে।

আজ তিনি লিখছেন, তিনি ঢাকায় একখান বাসা বানাইবেন, ছয় তলা। নিচে থাকবেন তিনি এক তলায় ভাড়া দিবেন হিন্দু, এক তলায় ভাড়া দিবেন খ্রিস্টান, এক তলায় বৌদ্ধ, এক তলায় মুসলমান, এক তলায় আদিবাসি আর বাসাটার নাম দিবেন বাংলাদেশ।

রাষ্ট্র বানানি আর ফ্লাট বাড়ি বানায়ে ভাড়া দেয়া যে এক জিনিস না, রাষ্ট্র মানে ভাড়া থাকনের বিষয় না এইডা এখন জাকির ভাইরে কে বুঝাইবো। তবে আর কেউ বাংলাদেশটারে ভাড়া বাড়ি মনে করে কিনা জানিনা তবে বাংলাদেশের হিন্দুরা করে। হিন্দুরা মনে করে বাসাডার মালিক মুসলমান আর সে এই বাসাটার ভাড়াট্টিয়া। বাড়ীওয়ালা একটা খচ্চর টাইপের মানুষ; বচ্ছর বচ্ছর ভাড়া বাড়ায়, বাসায় নাই নিরাপত্তা, টয়লেটে গন্ধ, কারেন্ট নাই, ঠিক মতো বাত্তি জ্বলে না, ছাদে যাওয়ার চাবি দেয়না বাড়ীওয়ালা, বাড়িওয়ালার বউ ঝগড়াইট্যা, কাপড় শুকানোর জায়গা নাই। তাই সে মাঝে মাঝে কয়, থাক শালা তোর ছাতার বাড়ি নিয়া আমি আরেক বাড়িত ভাড়া থাকতে গেলাম।

এই বাড়িটা তাঁরও। সেইটা বাড়ি বানানির সময় মালিকানা ঠিক হইছিল। সুখে দুঃখে, আনন্দ বেদনায় ভাগাভাগি কইর‍্যা থাকবো কথা ছিল, বাড়ির টয়লেটের পাইপ ফাটলে সবাই গায়ে গু মাখাইয়া সেইটা ঠিক করবো কথা আছিলো, কথা আছিলো ভুমি দস্যু, ডেভলপারগোরে একসাথে রুইখ্যা দেয়ার। আপনি মালিকানা ছাড়লেন ক্যেন? ক্যেন মনে করলেন আপনি ভাড়াটিয়া? ক্যান মনে করলেন একলা একলা ভালো থাকা যায়। কেন আপনার পারসিকিউশনরে পারসিকুইশন মনে হয় আরেকজনের পারসিকিউশনরে চেতনার বাস্তবায়ন মনে হয়? কেন সব জুলুমরে আপনার জুলুম মনে হয়না?

জাকির ভাই, আপনার বাসা আপনার মালিকানায় নাই, আপনি না বুইঝ্যা ডেভলপাররের হাতে তুইল্যা দিছেন। দানব সুলভ বুলডোজারে ভাঙা হইবো আপনার স্বপ্নের বাড়ি, ওইখানে মার্কেট হইবো বহুতল, আপনিও দুকান পাইবেন দুইখান।

এখনো সময় আছে বুক চিত্যায়া দাঁড়ান। নিজের জন্য না, নিজের সন্তানগোরে জন্য, আসেন বাড়িটারে রক্ষা করি। যদি আপনি সেই ডেভলপাররে চিনতে পারেন, তাঁর সামনে দাড়াইয়া কন, এই বাড়ি সবার, এই বাড়ির হয়তো অনেক ত্রুটি আছে, আমরা সবাই মিলা সারাইয়া তুলবো, এইখানে কেউ ভাড়াটিয়া না, আমাগো জিনিস আমাগো বুইঝ্যা নিতে দেন। দিস ইজ মাই কান্ট্রি, রাইট অর রং; তুমি ডেভলপার দূর হটো।

লেখাটির ফেইসবুক ভার্সন পড়তে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter