রাখ দিয়া কাদমোমে দিল নজরানা…..ছোটভাই ক্যাপ্টেন নিমো এইকালের আলী আব্বাসের গাওয়া গানটা শেয়ার দেয়াতে আমার ইচ্ছে হল অরিজিন্যাল গানটা শেয়ার দিয়ে সেই গানে অভিনয় করা আমার প্রিয় নায়ককে নিয়ে কিছু বলার।
এই গানটায় অভিনয় করেছেন ওয়াহিদ মুরাদ। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের সিনেমার অবিসংবাদিত রোম্যান্টিক হিরো। রোম্যান্টিক এপিলের জন্য তাঁর নামই ছিলো “চকলেট হিরো”। ওয়াহিদ মুরাদ অভিনয় করলে সিনেমা হতো শিওর হিট। উচ্চ শিক্ষিত ওয়াহিদ মুরাদ পাকিস্তানের ফিল্মের মেরুদণ্ড গড়ে দিয়ে যান। বাংলাদেশে যেমন রাজ্জাক, কোলকাতায় উত্তম কুমার তেমন পাকিস্তানে ছিলেন ওয়াহিদ মুরাদ। একাধারে তিনি ছিলেন অভিনেতা, স্ক্রিপ্ট রাইটার এবং প্রযোজক। অভিনেতা চেনার এক দারুণ দক্ষতা ছিল তাঁর, ঠিক সত্যজিৎ রায়ের মতো। অসংখ্য মানুষকে তিনি সিনেমার অভিনয়ে নামিয়েছেন এবং তাঁরা প্রত্যেকেই পরবর্তীতে দারুণ নাম করেছিলেন। আমাদের শবনমকেও পাকিস্তানে নিয়ে যান এই ওয়াহিদ মুরাদই তাঁর এক সিনেমায় অভিনয়ের জন্য। এমনকি তিনি তাঁর ড্রাইভারকে পশতু সিনেমায় নামিয়েছিলেন। সেই ড্রাইভার কালে কালে পশতু সিনেমার এক নম্বর হিরো হয়ে যায়।
নাদিমের কাছে একসময় ওয়াহিদ তাঁর বাজার হারাতে থাকে। তিনি হতাশা থেকে এলকোহলে ডুবে যেতে থাকেন। এর মধ্যে তাঁর পাকস্থলীতে একটা মেজর সার্জারি করতে হয়। তাঁর আয় উপার্জন কমে যেতে থাকে, কেউ তাকে আর নায়কের রোলে ডাকেনা। বড় জোর চেয়েচিন্তে চরিত্রাভিনেতার ক্যারেক্টার জুটতে থাকে। তাঁর সেই ড্রাইভারের বদৌলতে পশতু সিনেমায় কয়েকটা ক্যারেক্টারে অভিনয়ের সুযোগ পান। কিছুটা বাচার মতো আয় রোজগার হয়। মাঝে গাড়ি এক্সিডেন্ট করেন, গালে একটা ক্ষত হয়। একেবারেই ছিটকে পড়েন সিনেমার জগত থেকে। শেষ পর্যন্ত এই মহানায়কের ট্রাজিক জীবনাবসান হয় মাত্র ৪৫ বছর বয়সে ১৯৮৩ সালে। নিজের ঘরেই রাতে মারা যান। সকালে যখন তাঁর মৃতদেহ আবিষ্কার হয় তখন তাঁর মুখে একটা পান ছিলো।
ওয়াহিদ মুরাদের নিজের জীবনটাই হয়ে উঠেছিল এক ট্র্যাজিক গল্প। আর আমাকে ট্র্যাজিক নায়কেরা সবসময়েই টানে। তাই ওয়াহিদ মুরাদ আমার ভালোবাসার পছন্দের এক নায়ক। মন খারাপ হলেই এই গানটা দেখি। কত অজস্রবার এই গানটা দেখেছি তাঁর ইয়ত্তা নাই। আমার বিশ্বাস আপনারও ভালো লাগবে। এই গানটায় কত স্বচ্ছন্দ কত সাবলীল কত রোম্যান্টিক ওয়াহিদ দেখুন।
One thought on “ওয়াহিদ মুরাদ পাকিস্তানের সিনেমার অবিসংবাদিত রোম্যান্টিক হিরো।”
কোথায় হারিয়ে গেল সেইসব গীতিকা, সুরকার,,,,
বর্তমানের কোনও গানেই আগের সেই গভীরতা পাওয়া যায় না।