জাফর ইকবালের এই সংখ্যালঘু স্কেল লইয়া আমরা কী করবো?

জাফর ইকবাল একটা প্রবন্ধ লিখেছেন যার শিরোনাম হচ্ছে, “পদ্মা ব্রিজ দিয়ে কী হবে?”। সংক্ষেপে উনার বক্তব্য এইরকম যে, রাষ্ট্র কীভাবে চলছে তা সংখ্যালঘুর দৃষ্টিতে দেখতে ও বুঝতে হবে। সংখ্যালঘুরা যদি বলেন, তারা ভালো নেই; তাহলে রাষ্ট্র ভালো চলছেনা। এমন ভালো না চলা রাষ্ট্রে উন্নয়নই বা কী কাজে আসবে, পদ্মা সেতুই বা কী কাজে আসবে; এটাই তার প্রশ্ন। তবু প্রথমেই জাফর ইকবালকে একটা ধন্যবাদ দিতেই হবে কারণ তিনি তো অন্তত রাষ্ট্রের ভালো চলা বা মন্দ চলার একটা ইন্ডিকেটর আমাদের জন্য বের করেছেন!

জাফর ইকবাল অবশ্য বেশ কিছু উদাহরণ দিয়ে আমাদের কাজ একেবারে সহজ করে দিয়েছেন। আমরা যেন ভুল না করি তাই তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন কোথায় কোথায় জিজ্ঞেস করতে হবে। তিনি লিখেছেন, “নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়ি জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে সবাইকে ঘরছাড়া করা হয়েছিল। গাইবান্ধায় পুলিশে সাঁওতালদের ঘরে আগুন দিচ্ছে— পত্রপত্রিকায় সেই ছবি ছাপা হয়েছে। সর্বশেষ রাঙামাটির লংগদুর ঘটনায় পাহাড়ি মানুষদের বাড়ি জ্বালিয়ে তাদের সর্বস্ব লুট করে নেওয়া হয়েছে।“ এই তিন জায়গায় আমাদের জিজ্ঞেস করলেই চলবে রাষ্ট্র কেমন চলছে।

আচ্ছা তর্কের খাতিরে ধরা যাক এই উল্লেখিত তিন জায়গায় কিছু হয়নি। তাহলে কি জাফর ইকবাল স্কেলে রাষ্ট্র ভালো চলছে বলে ধরে নিতে হবে? উনার লেখা থেকে তো তাই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তাই না?

মানবাধিকার সংস্থার হিসাবে ২০০৯ সাল থেকে কমপক্ষে ৩২৫ জন গুমের শিকার হয়েছে; ১৩০০ জনকে ক্রস ফায়ারে মারা হয়েছে। গত বছরেই বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৭৩ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক গুলো লুট হয়েছে। শেয়ার মার্কেট লুট করা হয়েছে। ২০০৮-২০১৫ সাল পর্যন্ত সীমান্তে বি এস এফ ৩৪৬ জন বাংলাদেশের নাগরিককে হত্যা করেছে। ভারত আন্তর্জাতিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আমাদের নদীগুলোকে শুকিয়ে মেরেছে। দেশের মানুষের মতকে উপেক্ষা করে প্রকৃতি বিনাশি রামপাল প্রকল্প গায়ের জোরে বাস্তবায়ন করেছে। সকল পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাস করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নুলো করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ভারত প্রকাশ্যে আমাদের গত সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির সময় হস্তক্ষেপ করেছে। ভারতীয় সচিব এরশাদকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য চাপ দিয়েছে, এটা নজিরবিহীন। সরকার বিরোধীতার কোন স্পেইস নাই। এমন অবস্থা করে ছেড়েছে কাউকে মাঠে নামতে দেয়া হয়না। আমরা ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করতে পারিনা। ক্ষমতার সাথে নির্বাচনের আজকাল আর কোন সম্পর্ক নাই।

এরপরেও জাফর ইকবাল স্কেলে ‘রাষ্ট্র তখন ভালো চলতেছে!’ এই হেন জাফর ইকবাল আর তাহার উদ্ভাবিত সংখ্যালঘু স্কেল লইয়া আমরা কী করিবো? আমাদের কীবা কাজেই তা লাগিবে, আমরা তাহা কোথায় রাখিব?

Share

One thought on “জাফর ইকবালের এই সংখ্যালঘু স্কেল লইয়া আমরা কী করবো?

  1. আমি জানিনা জাফর ইকবাল কাঠের নাকি বাঁশের স্কেলের কথা বলেছে,তবে যাি বলুক, ঐ স্কেল টা দিয়ে ওনার গুয়া চুলকানোর কামটা করা যেতে পারে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter