আমি নিউ ইয়র্কে বাড়ি কিনতে পারলে, পার্বত্য চট্টগ্রামে কেন নয় ?

পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর যা অসন্তোষ আছে সেটার সমাধান খুবই সম্ভব। বাস্তব রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সমাধান সম্ভব; যদি পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী চায় তাহলে সম্ভব। বাংলাদেশকে বাঙালির রাষ্ট্র বানাতে চাওয়া আর তাদের উপর সেই বাঙালিয়ানা চাপায় দিতে চাওয়াটা শতভাগ অন্যায়, অগ্রহনযোগ্য। অসন্তোষের একটা বড় শুরু তো সেখানে থেকেই।

তাহলে সমাধান কোন পথে?

আমরা একসাথে বসে যেই ভবিষ্যতের রিপাবলিক বানাবো সেই রিপাবলিকে সম নাগরিক অধিকার নিয়ে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী থাকবে। তবে তাদের ভুমির সমস্যা প্রসঙ্গে অবশ্যই পাহাড়িরা আগে যে যেই ভুমিতে বসবাস চাষাবাদ করত তাকে ঠিক সেখানে বসাতেই হবে এই সলিড ভিত্তিতে সমাধান অবশ্যই সহজে খুঁজে নিতে পারি। সেজন্য তো ডায়ালগ করতে হবে, সমতলের রাজনৈতিক শক্তির সাথে ভাব দেয়া নেয়া করতে হবে। সেটা না করে শুধু দাবী করলে তো চলবেনা যে একমাত্র তাঁদের বাতলানো পথেই সমাধান করে দিতে হবে। বাস্তবে সেটা হবেও না।

পাহাড়ে বাঙালি ঢুকতে পারবেনা, এটা নেগেটিভ আবদার। আত্মঘাতি। তবে শুনতে মনভোলানি। পাহাড়ি জনগোষ্ঠি মোট ১২-১৫ লাখ। কেবল নিজেরাই পণ্য বানাবো আর সেই পণ্য নিজেরাই কিনব – এমন বুদ্ধির ইকোনমি একটা আলাদা রাষ্ট্র বানায়ে এই জনসংখ্যায় টিকানো অসম্ভব। এরচেয়ে পাহাড়ি-সমতলি পণ্য বিনিময়ের একটা অর্থনীতিতে ১৫ লাখ পাহাড়িরা পেতে পারে ১৬ কোটির ভোক্তা বাজার। যে কোন পাহাড়ি পণ্যের ক্ষেত্রে একথা সত্য।

তবে এটা ঠিক যে পাহাড়িদের প্রেফারেন্স বা প্রায়োরিটি নিশ্চিত করার একটা দিক আছে যেটা নিয়ে কাজ করতে হবে। আমি চাইলে নিউ ইয়র্কে বাড়ি কিনতে পারি, আর পার্বত্য চট্টগ্রামে কেন কিনতে পারবোনা জমি? এই গ্লোবাল বিনিময়ের যুগে এটা এবসার্ড আবদার। তবে অবশ্যই আপনারা বলতে পারেন, আপনাদের এলাকায় খোদ আপনারাই যেন মারজিনালাইড না হন। নির্ধারক সাংস্কৃতিক আধিপত্য যেন কমে না যায়; সংস্কৃতি যেন রক্ষা পায়, বৈষ্যমের শিকার যেন না হন, ঠিক আছে এসব বলুন। তবে সেইজন্য উপযুক্ত রাজনৈতিক শক্তির সাথে নিগোশিয়েশন করেন। কিন্তু চান্স পাইলেই অস্ত্র হাতে আমার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন এইটা একই সাথে চলবেনা।

এই রাষ্ট্র আপনারও এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন এক রিপাবলিক করে গড়ে নিতে চাইলে সমতলিদের বেশির ভাগকেই সাথে পাবেন। তাই সমাধান তাঁদের হাতেই, তারা সমাধান চাইতেছেন কিনা সেইটা জরুরী প্রশ্ন।

লেখাটির ফেইসবুক ভার্সন পড়তে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Feeling social? comment with facebook here!

Subscribe to
Newsletter