ছাত্র জীবনে হোস্টেলে অখাদ্য খাবার খেতে হতো। যেদিন মাংস পরিবেশন করতো সেদিন আমরা বাটি থেকে কড়ে আঙুলের সমান দুইটা মাংসের অতি ক্ষুদ্র টুকরা প্লেটের একপাশে রাখতাম আর ওইটা দেখে দেখে ভাত খেতাম। মাংসটা খেতাম সবার শেষে। আবার মাঝে মাঝে দুষ্টু বন্ধুরা ছোঁ দিয়ে মাংসটা তুলে খেয়ে ফেলতো। শেষ পর্যন্ত মাংসটা খাওয়াই হতো না।
আমাদের শাসক দলের কাছে জামায়ত হচ্ছে ওই মুল্যবান মাংসের টুকরা। সে দেশবাসীকে ওই মাংসের টুকরা দেখিয়ে ফ্যাসিবাদ খাওয়ায়।
খাবার খেতে না চাওয়া শিশুকে মায়েরা যেমন হাতে মোবাইল ধরিয়ে দিয়ে অথবা টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন চালিয়ে টুপ করে মুখের মধ্যে খাবার ঢুকিয়ে দেয়। ঠিক তেমন জামায়াত হচ্ছে টেলিভিশনের কার্টুন বা হাতে ধরে থাকা মোবাইলের উজ্জ্বল স্ক্রিন। ওইটা দেখায়ে বা হাতে ধরায়ে আমাদের দুঃশাসন খাওয়ায়। আর আমরা কপাৎ করে দুঃশাসন গিলে ফেলি।
শাসক দলের জামায়াতকে দরকার। বড় বেশী দরকার। ওল্ড টেস্টামেন্টে আদিপাপ বলে একটা বিষয় আছে। এই আদিপাপ থেকে মানবজাতিকে মুক্তি দেয়ার জন্য যীশু ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন। তারপরেই উত্থিত হয়েছিলো সেই আদিপাপের কলঙ্কমুক্ত মানুষ।
শাসক দল তাই তার বয়ানে রেটরিকে জামায়াতকে প্রতিনয়ত ক্রুশবিদ্ধ করে যেন তারা ফ্যাসিবাদের গ্লানি মুছে নিস্পাপ হয়ে পুনরুত্থিত হয়।
এইজন্যই শাসক দল এতো কিছু করে কিন্তু জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেনা। তারা নিজেদের এই দলের অল্টার ইগো হিসেবে গড়ে তুলেছে অবচেতনেই। তাই তাদের অস্তিত্বের সাথে জামায়াত অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে গেছে। এটা শাসক দলের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি।