বাংলাদেশের ভুপ্রকৃতি তৈরি হয়েছে হাজার হাজার বছর ধরে নদী দিয়ে বয়ে আনা পলি দিয়ে। এই পলি শুধু জমির উচ্চতাই বাড়ায় না এটা জমির উর্বরা শক্তিও বাড়ায়। এই পলি জমে মুল ভুখন্ড তৈরি হওয়ার চারটি পর্যায় আছে। প্রথম পর্যায়ে বুঝা যায়না যে পানির নিচের জমির তলদেশ উচু হচ্ছে, কিন্তু পলি জমতে থাকে। এটা প্রথম পর্যায়। একটা সময় ভাটার সময় সেই জমি জেগে উঠতে থাকে এটা দ্বিতীয় পর্যায়। তৃতীয় পর্যায়ে বছরে একবার সেই জমি প্লাবিত হয় বন্যা দিয়ে। এটা তৃতীয় পর্যায় আর শেষে এটা মুল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত হয় এবং কদাচিৎ প্লাবিত হয়। এটা চতুর্থ পর্যায়। এই পর্যায় গুলো অতিক্রম করতে কয়েক হাজার বছর লেগে যায়।
ভূপ্রকৃতির এই বিশেষত্ব মাথায় রাখলে আমরা দেখবো, বিদেশী সাহায্য নিয়ে আমাদের বাধ ভিত্তিক পানি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কী রকম সর্বনেশে। এই পদ্ধতিতে পানিকে পলিসহ টলমল করে কোন রকমে সমুদ্রে পৌঁছে দেয়া হয়। মহার্ঘ পলি জমিতে না এসে নদীর তলদেশে জমতে থাকে। যেই পলি বিস্তির্ন এলাকায় ছড়িয়ে পরে জমির উর্বরা শক্তি বাড়ানোর কথা ছিল সেটা না হয়ে সেই পলি নদীর সংকির্ন তলদেশে জমা হয়ে নদীর পানি ধারন করে রাখার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় দ্রুত।
বাংলাদেশ জানতো কীভাবে এই বন্যার সাথে সাথে বেঁচে থাকতে হয়। তাঁরা বসত বাটি বানানোর সময় একটা পুকুর কেটে সেই মাটিতেই ভিটা উচু করে বাড়ি বানাতো। বন্যার পানি সেই বাড়ি ছুতে পারতো না। আর পুকুরও কিছু পানি ধরে রাখতো।
কলোনি মাস্টারেরা মনে করে আমাদের জ্ঞান নাই, আমরা অসভ্য বর্বর। তাই সভ্য করার মিশন নিয়ে আমাদের নদী, পরিবেশ আর ভু প্রকৃতির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।
পশ্চিমের আলোতে যাদের চোখ ধাধিয়ে যায়। তাদের বলছি, অপেক্ষা করুন অন্ধকার আসছে, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন না। আলোর জন্য ওদের এই অসভ্যদের কাছেই হাত পাততে হবে।